নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর তানোরের বাধাইড় ইউনিয়ন ‘ইউপি’ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিদ্যুত ও পানি নাই বিভিন্ন লতাপাতার ঝোড় ঝাড়ে সেটি মশা, সাপ ও ব্যাঙের আবাস ভূমিতে পরিণত হয়ে উঠেছে। তৃণমূলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দৌড়-গোড়ায় পৌচ্ছে দিতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্বাস্থ্য-উপকেন্দ্রটি মানুষের কোনো কাজে আসছে না প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে।
গত ৫ জুলাই বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, তানোর-আমনুরা রাস্তার জুমারপাড়া মোড় সংলগ বাধাইড় ইউপি স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রটি কিছু সময়ের জন্য খোলা থাকলেও সেখানে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নাই। খোজ নিয়ে জানা গেলো যারা ছিল তারা জুমারপাড়া মোড়ে গিয়ে টেলিভিশনে খেলা দেখছেন। পরের দিন ৬ জুলাই বৃহ¯প্রতিবার আবারো সেখানে গিয়ে ভিরতে যেতেই ভবণের চারপাশে আবর্জনায় ভরপুর। ভবনের ভিরতে প্রবেশ করতেই বাম দিকে লাগানো আছে সাইনবোর্ড। লিখা রয়েছে সকল ধরণের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যায়। ভবনের পূর্বদিকের ঘরে বসে ছিলেন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আসাদুজ্জামান। ঘরে প্রবেশ করে তার টেবিলে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে রয়েছে কিছু প্রয়োজনীয় ঔষুধ। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কত রোগী দেখা হয়েছে। কোন ধরণের খাতা দেখাননি। কি কি ঔষুধ পাওয়া যায়। তিনি জানান ভিটামিন বি, ফলিক এসিড, আয়রন, প্যারাসিটামল। মাসে কত টাকার ঔষুধ বরাদ্দ হয় জানতে চাইলে তিনি জানান এটা আমার অজানা। এইসব বলতে পারবেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক। আপনি একাই কেন। আর লোকজন কোথায়। তিনি জানান ফার্মাসিষ্ট আমিনুল ইসলাম ছিলেন। কিছুক্ষণ আগে চলে গেছেন। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে আমিনুল জানান স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অবস্থা ভয়াবহ। গত ২ বছর আগে এক প্রসুতিকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া মাত্রই বিদ্যুৎ চুরি হয়ে যায়। কে চুরি করেছে তাও অজানা। তারপর থেকে নেই বিদ্যুৎ। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন আপনি টয়লেট গুলো দেখেন কী দুরঅবস্থা। এক গ্লাস পানি খাওয়ার প্রয়োজন হলে অনেক দুর থেকে নিয়ে আসতে হয়। এ দুইজন সামান্য সময় কেন্দ্রটিতে থাকেন। আসাদুজ্জামানের বাড়ী ভোলাহাট এলাকায়। সেখান থেকে মাঝে মাঝে আসেন তিনি। আর আমিনুলের বাড়ী নাচোল এলাকায়। তারই একই অবস্থা। আসাদুজ্জামান আরো জানান মোট ৫ জন শূণ্য পদের মধ্যে আমরা দুই জন রয়েছি। বাকি ৩ টি পোষ্টে কোন লোক নেই। বাকি পোষ্ট গুলো হলো ভিজিটর, আয়া, এমএলএসএস। ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানায় কয়েকদিন থেকে মাঝে মাঝে খোলা দেখছি কেন্দ্রটি। তবে কোন রোগী যায় না। অথচ খাতার রবির নামে ভুয়া ঔষুধ দিয়ে বিক্রি করা হয় বাজারে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও নিয়মিত প্রতিমাসে ঔষুধ বরাদ্দ হয়। চলে যায় কালো বাজারে। শুধু বাধাইড় ইউপির স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির এমন অবস্থা না বাকি আরো ৬ ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো চরম বেহাল অবস্থা। বছরের পর বছর ধরে কর্তৃপক্ষ সরকারী কোষাগার থেকে বেতনভাতা পেলেও কেউ আসেন না গ্রামীণ অঞ্চলের এইসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এনিয়ে উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইমারজেন্সি নম্বরে মোবাইল করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে এক নারী রিসিভ করে জানান ম্যাডাম নেই অসুস্থতার জন্যে বাড়ীতে রয়েছেন। এর অতিরিক্ত তথ্য দিতে চাননি তিনি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শওকাত আলী বলেন, দ্রুতভাবে পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ