নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুলিশি বাধা ও দলীয় কোন্দলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সারা দেশে বিএনপির কর্মিসভা। দলকে নির্বাচন ও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করতে গত ২২ এপ্রিল থেকে সাংগঠনিক জেলাগুলোতে এ কর্মিসভা শুরু হয়েছে। কেন্দ্র থেকে প্রাথমিকভাবে বেঁধে দেয়া সময়সীমা গতকাল শেষ হলেও সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কয়েকটি জেলার কর্মী সম্মেলন ঢাকায় করার কথাও ভাবা হচ্ছে।
গত ২২ এপ্রিল থেকে ৭ মে সময়ের মধ্যে ৭৭টি সাংগঠনিক জেলায় কর্মিসভা করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ৫১টি দল গঠন করেছিল বিএনপি। গতকাল রোববার বেঁধে দেয়া সময়ের শেষ দিন পর্যন্ত ২০টি বা এর চেয়ে কয়েকটি বেশি জেলায় কর্মিসভা করতে সক্ষম হয় দলটি। জেলাগুলো হলোÑ চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ এবং মহানগর, কিশোরগঞ্জ, পাবনা, ঝিনাইদহ, যশোর, বরিশাল, শেরপুর, খুলনা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, বরিশাল মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, ঝিনাইদহ, বরিশাল ও নারায়ণগঞ্জের কর্মিসভায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নাটোরসহ কয়েকটি জেলায় পুলিশের অনুমতি না পাওয়ার কারণে কর্মিসভা করা সম্ভব হয়নি বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বেশ কয়েকটি জেলায় এখনো কর্মিসভা করা সম্ভব হয়নি। নবগঠিত জেলা কমিটি নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনাস্থার প্রকাশ ঘটেছে বিভিন্ন জেলায়। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কেন্দ্রে থেকে অযোগ্যদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে বলে ুব্ধরা বলছেন।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ১৮টি জেলার কর্মিসভায় কমবেশি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও বাগি¦তণ্ডার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও কয়েকটি স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং ঝিনাইদহে কর্মিসভায় দলটির নেতাকর্মীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩২ জন আহত হন। চট্টগ্রাম উত্তরে সংঘর্ষের কারণে কর্মিসভা হয় সংক্ষিপ্ত। সংঘর্ষের মুখে চট্টগ্রাম দক্ষিণের কর্মিসভায় কেন্দ্রীয় নেতারা যাননি। আর সর্বশেষ রোববার নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লাস্থ জেলা পরিষদসংলগ্ন হিমালয় চায়নিজ সেন্টুরেন্টে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কর্মিসভা শুরুর আগে নেতাকর্মীদের মধ্যে তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রদলের নেতাদের হাতে মারধরের শিকার হন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস। লাঞ্ছনার শিকার হন ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রনি।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মিসভা সম্পন্ন করতে না পারার কারণ প্রসঙ্গে দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ভাইস চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৪০টি জেলায় কর্মিসভা হয়েছে। বাকিগুলোতে ১৫ মের মধ্যে কর্মিসভা করতে মৌখিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং পুলিশের অনুমতি না পাওয়ার কারণে বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সব জেলায় কর্মিসভা করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, যেসব জেলায় ইতোমধ্যে কর্মিসভা হয়েছে, সেসব জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা দলীয় গ্রুপিং মিটিয়ে ফেলারও চেষ্টা করেছেন।