নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজনৈতিক অংগনে কুষ্টিয়ার ( মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনটির গুরুত্ব অনেক। ১৩টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা মিলিয়ে কুষ্টিয়া-২ (৭৬) ( মিরপুর-ভেড়ামারা) নির্বাচনী এলাকা। এই আসনটিতে বরাবরই বিএনপির প্রার্থী জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে আসছে।
তবে বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনে এই আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যায়। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু যত বারই এই আসন থেকে মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছেন ততবারই তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন। এই আসনটি আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াতের ঘাটি বলে পরিচিত বহন করে আসলেও বিএনপির পক্ষেই অধিকাংশ ভোটাররা। হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করায় এবং বিএনপি প্রার্থী না থাকায় এই আসনে হাসানুল হক ইনু জয় লাভ করেছেন। তিনি নির্বাচিত হলেও আজ পর্যন্ত মিরপুর-ভেড়ামারা এলাকায় জাসদকে সাংগঠনিক ভাবে জোড়ালো করতে পারেনি। ফলে জাসদের মধ্যেও রয়েছে হতাশ। অপর দিকে জাসদ- আওয়ামীলীগের অভ্যান্তরিন কোন্দল চরম পর্যায় রয়েছে। প্রায় দিনই চলছে দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ। এক দল অপর দলকে ভৎসনা দিয়ে বক্তব্য রেখে চলেছেন। আওয়ামীলীগ প্রকাশ্যে হাসানুল হক ইনুর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বক্তব্য হলো হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে আজ জয়লাভ করেছেন। নৌকা প্রতীক বাদ দিয়ে নির্বাচন করে দেখান কিভাবে তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেন। এর পরেও এই আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী না থাকায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে একভাবে নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে।
আপর দিকে মিরপুর-ভেড়ামারা এই নির্বাচনী এলাকার বিএনপির কান্ডারী, জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাবেক কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বারবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করায় এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। রাস্তা-ঘাট ব্রীজ-কালভাট স্কুল কলেজসহ ব্যাপক প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন করায় এই আসনটি এখনো বিএনপির পক্ষেই রয়েছে। সাধারণ মানুষের সুখে -দুখে সব সময় তিনি পাশে থাকায় জনপ্রিয়তা বেড়েছে ব্যাপক হারে। তিনি একদিকে যেমন সংগঠনকে শক্তিশালি করতে রাজনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন, তেমনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন। ফলে বিএনপির দলীয় নেতা কর্মীসহ সাধারণ মানুষ আশা করছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম এই হারিয়ে যাওয়া আসনটি আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন। এখন পর্যন্ত বিএনপির অন্য কোন প্রার্থীর নাম শুনা না গেলেও মাঠে রয়েছেন অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম একক ভাবে। তবে অধ্যাপক শহিদুল ইসলামের বিকল্প প্রার্থী এই আসনে বিএনপির নেই বলেও সাধারণ নেতা কর্মীরা জানিয়েছেন। অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বিএনপির প্রার্থী হলে এই আসন আবারও ফিরে আসবে বলে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে।
এছাড়া এই আসনে জামায়াত ও জাতীয় পাটি প্রার্থী হবেন বলে গুঞ্জন থাকলেও তারা রয়েছেন সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাপা নেতা আহসান হাবিব লিংকন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন বলে প্রচার থাকলেও তা রয়েছে দলের মধ্যে সীমিত। বরং আহসান হাবিব লিংকনের চেয়ে এই আসনটিতে জামায়াতের জনপ্রিয়তা অনেক বেশী রয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ