আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আংশিক অনুমোদন করার কারণে ছয়টি মুসলিম দেশের নাগরিক ও শরণার্থীরা আর ‘সহজে’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ আইন মূলত ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেনের নাগরিক ছাড়াও সব দেশের শরণার্থীদের জন্য প্রয়োগ করা হবে।এ আদেশের বাধ্যবাধকতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ওই ছয় দেশের নাগরিকদের ‘রক্তের সম্পর্কের নিকটাত্মীয়’ এবং ব্যবসায়িক সম্পর্কবহির্ভূত কেউ আর ভিসা পাবে না।আদেশে নিকটাত্মীয়ের সংজ্ঞা দাঁড় করানো হয়েছে। তাতে নিকটাত্মীয়ের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে দাদা-দাদি, কাকা-ফুফু, ভাতিজা-ভাতিজি, নাতি-নাতনিসহ অনেকেই। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে এ আদেশ কার্যকর হয়। এরপর হাওয়াই অঙ্গরাজ্য এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আদালতের কাছে পরিষ্কার ব্যাখ্যা চায়।যদিও এ আইনের কার্যকারিতা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তাঁরা প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন। অনেকে মনে করছেন, এটা মানুষের ভোগান্তি বাড়াবে।এ সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটি আংশিকভাবে অনুমোদন দেয়। সর্বোচ্চ আদালত যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ওই ছয় দেশের নাগরিকদের ‘নিকটাত্মীয়’ ছাড়া আর কাউকে এবং কোনো শরণার্থীকে ভিসা না দেওয়ার অস্থায়ী আদেশ দেয়।সর্বোচ্চ আদালত এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলতি বছরের অক্টোবর নাগাদ দিতে পারে।এই আইনের ফলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ওই ছয় দেশ থেকে ‘নিকটাত্মীয়’ ছাড়া আর কেউ আমেরিকায় প্রবেশ করতে পারবে না।যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন যাঁরাযুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নাগরিকদের বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, বাগদত্তা, সন্তান, পুত্রবধূ, মেয়ে জামাই, সহোদর, সৎ ভাই-বোন।এ ছাড়া শিক্ষা কিংবা ব্যবসায়িকভাবে সম্পর্কযুক্ত যে কেউ আসতে পারবেন।যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে পারবেন যাঁরাযুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নাগরিকদের দাদা-দাদি, কাকা-কাকি, নাতি-নাতনি, ভাতিজা-ভাতিজি বা অন্য কোনো ‘দূরসম্পর্কের’ আত্মীয়স্বজন।তবে যাঁদের ভিসার মেয়াদ এখনো আছে, এ আদেশের প্রভাব তাঁদের ওপর পড়বে না। আর দ্বৈত পাসপোর্টধারীরাও এর আওতাভুক্ত হবে না।প্রতিক্রিয়াএ রায়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন বলেন, ‘আমাদের দেশের নিরাপত্তা ভয়াবহভাবে হুমকির মুখে। কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারে এটা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।’আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন ইমিগ্র্যান্টস রাইট প্রজেক্টের পরিচালক ওমর জাদওয়াত বলেন, ‘বাস্তবে এই নিষেধাজ্ঞা অনেক মানুষকে চরম ভোগান্তিতে ফেলবে। এটা তুলে না নেওয়া পর্যন্ত এ ভোগান্তি অব্যাহত থাকবে।’ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) সভাপতি ডেভিড মিলিভ্যান্ড বলেন, ‘আদালতের এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে আসার অপেক্ষায় থাকা ঝুঁকিগ্রস্ত মানুষকে চরম হুমকির মধ্যে ফেলবে। চিকিৎসার জন্য আসা কিংবা নিষ্পাপ ভাসমান শরণার্থীদেরও বিপদে ফেলবে এ সিদ্ধান্ত। তাই সবার স্বার্থে এ আদেশ পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ