২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:০৮

ভিন্ন চিত্র সায়েদাবাদে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন কর্মব্যস্ত নগরবাসীরা। নাড়ির টানে যান্ত্রিক নগরী ছেড়ে যাওয়া মানুষগুলোর পদচারণায় ভরে উঠেছে রাজধানীর ট্রেন ও বাস টার্মিনালগুলো। তবে কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেল সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে। বাড়ি ফেরা মানুষের খুব একটা চাপ নেই এবং টার্মিনালের আশেপাশের কাউন্টারগুলোও ফাঁকা।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল রোডের বাসগুলো। এমনকি কিছু কিছু বাস একাধিক আসন খালি রেখেই যাত্রা শুরু করছে।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার অন্যতম বৃহৎ এ বাস টার্মিনাল থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল রোডে যেসব পরিবহন ছেড়ে যায় তার সিংহভাগ টিকিট কাউন্টার জনপথ মোড়ে অবস্থিত। এ ছাড়া সায়েদাবাদ থেকে বাস ছেড়ে যাওয়ার পর যাত্রাবাড়ি ও কাঁচপুর ব্রিজ এলাকা থেকেও যাত্রী তোলা হয়।

সায়েদাবাদের জনপথ মোড় ও আশপাশের কাউন্টারগুলোতে দেখা যায়, এ রোডে হানিফ, ঈগল, শ্যামলী, জোনাকী, ইকোনো, এনা, সৌদিয়া, সাকুরা, একুশে মুন, পর্যটক, রয়েল কোচ, আল-মোবারকা, কে কে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস চলাচল করছে। প্রতিটি পরিবহনের কর্মীরা হাক ছেড়ে যাত্রীদের ডাকছেন।

ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রোডে চলাচল করা আল মোবারকা পরিবহন কাউন্টারের মো. ইয়াসিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে মানুষ ইতোমধ্যে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া শুরু করেছেন। তবে যাত্রীদের চাপ এখনো সেভাবে নেই। আজ (বৃহস্পতিবার) অফিস শেষে হয়তো চাপ বাড়বে। আবার রোজার কারণে অনেকে রাত্রে ভ্রমণ করে না। তাই আমরা ধারণা করছি, আগামীকাল শুক্রবার সকালে যাত্রীদের চাপ সব থেকে বেশি থাকবে।

তিনি জানান, নন-এসি গাড়িতে আগে সিলেট যেতে ভাড়া ছিল ৩৫০ টাকা। তবে ঈদ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে যাত্রী প্রতি ৫০০ টাকা ভাড়া নেয়া হচ্ছে। আর এসি গাড়ির ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা। আগে এসি গাড়ির ভাড়া নেয়া হত ৫০০-৫৫০ টাকা।

সিলেট ও চট্টগ্রাম রোডের হানিফ পরিবহন কাউন্টারের ইসমাইল জানান, এখনো যাত্রীদের কোনো চাপ নেই। সকাল থেকে যে কয়টি গাড়ি ছেড়ে গেছে সবকয়টিতেই একাধিক আসন খালি ছিল।

লক্ষ্মীপুর রোডের ইকোনো পরিবহনের কাউন্টারম্যান আনোয়ার বলেন, সায়েদাবাদ থেকে প্রতি ঘণ্টায় ইকোনো পরিবহনের গাড়ি রয়েছে। যাত্রীরা যখন খুশি তখন এসে টিকিট নিতে পারবেন। সিটের (আসন) কোনো সমস্যা হবে না। তবে আগে আসলে ভালো সিট পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, আজও (বৃহস্পতিবার) অফিস আছে। কাল (শুক্রবার) থেকে ঈদের বন্ধ শুরু হবে। ফলে বাড়ি ফেরার চাপ মূলত আগামীকাল (শুক্রবার) সকালেই শুরু হবে।

ঢাকা থেকে লক্ষীপুরের গ্রামের বাড়ির যাচ্ছেন মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) বাসে অনেক ভিড় হতে পারে। রাস্তায় যানজটও হতে পারে, তাই একদিন আগেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি। অফিসের বসকে বলে আজকের দিনটা ছুটি নিয়ে নিয়েছি।

খুলনার পর্যটক পরিবহনের যাত্রী আমিনুল হোসেন বলেন, খুলনা যেতে হলে সায়েদাবাদ বা গাবতলী থেকে বাস পাওয়া যায়। আমি ধলপুরে থাকি তাই সায়দাবাদ থেকেই যাচ্ছি। কারণ, গাবতলী যেতে অনেক ঝামেলা, রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট।

তিনি আরও বলেন, গ্রামের বাড়িতে বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি সবাই আছেন। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করব এর আনন্দই আলাদা। সবাই আমার জন্য পথ চেয়ে আছেন, কখন বাড়ি ফিরব। দোয়া করবেন, যাতে কোনো প্রকার বিপদ ছাড়াই বাড়িতে পৌঁছাতে পারি।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জুন ২২, ২০১৭ ২:৩৬ অপরাহ্ণ