২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৫৫

রাষ্ট্রপতির গাড়ি আটকে পুরস্কার পাচ্ছেন নিজলিঙ্গাপ্পা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

কে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? দু’জনের গাড়িতেই লালবাতি। দুই দিক থেকেই সাইরেনের শব্দ। একদিকে, দেশের সাংবিধানিক প্রধান রাষ্ট্রপতির গাড়ি। অন্যদিকে, একটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স। কার জন্য আগে রাস্তা ক্লিয়ার করতে হবে! ভিভিআইপি নাকি মরণাপন্ন রোগীর হাসপতালে যাওয়ার পথ কোনটা সুগম করা দরকার?

এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর মুহূর্তে ঠিক করে ফেলেন এমএল নিজলিঙ্গাপ্পা। বেঙ্গালুরু ট্রাফিক পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি। প্রোটোকল ভুলে রাষ্ট্রপতির গাড়ির দিকে হাত দেখিয়ে অ্যাম্বুলেন্সকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখান।

গত শনিবারের এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তিনি একা নন সঙ্গে থাকা ট্রাফিক কনস্টেবল বিশ্বনাথ রাও-কেও তাই পুরস্কৃত করল বেঙ্গালুরু পুলিশ।

ভারতের এবেলার খবরে বলা হয়, বেঙ্গালুরু শহরের ব্যস্ত এলাকা ট্রিনিটি সার্কেলে দায়িত্বে ছিলেন ওরা। বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতিকে গাড়িবহর যাবে রাজভবনে। ওই এলাকা পার হয়েই যেতে হবে। ভিভিআইপি মুভমেন্ট ডিউটি। সাধারণত সিনিয়র অফিসারদেরই পাঠানো হয়। কিন্তু অফিসারের অভাব থাকায় এক কনস্টেবল-সহ সাব ইন্সপেক্টর নিজলিঙ্গাপ্পাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সাধারণ নিয়মে দেশের প্রথম নাগরিকের পথে কোনো বাধা যাতে না তৈরি হয় তা দেখার দায়িত্ব থাকে ট্রাফিক বিভাগের উপরে। কিন্তু ঠিক একই সময়ে রিচমন্ড রোডের একটি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসে একটি অ্যাম্বুলেন্স। দোটানায় পড়ে যান নিজলিঙ্গাপ্পা। একদিকে, রাষ্ট্রপতির গাড়ি, অন্যদিকে, অসুস্থ রোগীর অ্যাম্বুলেন্স। দু’টিই সমান গুরুত্বপূর্ণ। মুহূর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর সেটাই করে দেখিয়েছেন ওরা। মাত্র ১৫০ মিটার দূরের গাড়িকে হাত দেখিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি পার করে দেন। না, এত দ্রুততার সঙ্গে এই কাজটি করা হয় যে, রাষ্ট্রপতির গাড়িবহরকেও থমকে যেতে হয়নি।

যত সহজ মনে করা হচ্ছে ততটা সহজ ছিল না এই সিদ্ধান্ত। সুষ্ঠুভাবে এই কাজটা করে ফেলাও সহজ ছিল না। সত্যিই উপস্থিতবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন ওরা। একই সঙ্গে সাহস ও তৎপরতার সঙ্গে দু’দিক সামলেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার প্রবীণ সুদ।

রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় সেদিন বেঙ্গালুরুতে ছিলেন মেট্রো রেলের চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনের জন্য। সেই কারণে রাস্তাঘাটে ভিড়ও ছিল। তারই মধ্যে দুই ট্রাফিক পুলিশের এমন তৎপরতাকে প্রশংসা করেছেন বহু মানুষ। কর্ণটক পুলিশের কর্তাদের পাশাপাশি আইপিএস অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষেও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

শিগগির সাব ইন্সপেক্টর এম এল নিজলিঙ্গাপ্পা ও ট্রাফিক কনস্টেবল বিশ্বনাথ রাও-কে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানা গেছে। তবে তার আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হিরো হয়ে গিয়েছেন ওরা। অনেকেই বলছেন, ভিআইপি কালচারে অভ্যস্ত দেশের মানুষের সামনে নতুন নজির তৈরি করেছেন বাঙ্গালুরু ট্রাফিক পুলিশের ওই দুই সদস্য।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :জুন ২২, ২০১৭ ১২:৫৮ অপরাহ্ণ