২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৫৬

বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে দুই সীমান্তে ৪ বাংলাদেশি নিহত

বৃহস্পতিবার ভোরে নওগাঁর হাঁপানিয়া দুয়ারপাল সীমান্তে নীলমারী বিল এলাকায় ভারতের ক্যাদারীপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ জোয়ানরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। নিহতরা হলেন- পোরশা উপজেলার বিষ্ণপুর বিজলীপাড়ার শুকরার ছেলে রনজিত কুমার), দিঘীপাড়া গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে মফিজুল ইসলাম এবং কাঁটাপুকুরের মৃত জিল্লুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন।

আর বুধবার দিবাগত রাতে যশোরের শার্শা সীমান্তে ভারতের বন্যাবাড়ীয়া ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা হানেফ আলী ওরফে খোকাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। মৃত হানেফ শার্শার অগ্রভূলোট গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বুধবার দিবাগত রাতে ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে গরু আনতে যান নিহতরাসহ কয়েকজন। বৃহস্পতিবার ভোররাতে গরু নিয়ে ফেরার পথে পোরশার দুয়ারপাল সীমান্ত এলাকার ২৩১/১০(এস) মেইন পিলারের নীলমারী বিল এলাকায় ভারতের ক্যাদারীপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ জোয়ানরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।

এসময় অন্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও যুবক গুলিবিদ্ধ হন তিন বাংলাদেশি। নিহতদের মধ্যে মফিজুল ইসলামের গুলিবিদ্ধ মরদেহ বাংলাদেশের ২০০ গজ অভ্যন্তরে আর রনজিত কুমার ও কামাল হোসেনের মরদেহ ভারতের ৮০০ গজ অভ্যন্তরে পড়ে ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ১৬ বিজিবির হাঁপানিয়া ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোখলেছুর রহমান জানান, তিনজন গুলিবিদ্ধের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একজন মারা গেছে। অপর দুইজন ভারতের অভ্যন্তরে মারা গেছে কি-না খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

এদিকে বেনাপোল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশি এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাতে যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভূলোট গ্রামের হানেফ আলী ওরফে খোকা নামের এক রাখালকে ধরে নিয়ে যায় ভারতের বন্যাবাড়ীয়া ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা। সেখানে তার ওপর বিএসএফ সদস্যরা নির্যাতন চালানোর এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।

অগ্রভূলোট বিওপির কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোজাম্মেল হোসেন বাংলাদেশি যুবকের ভারতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য, হানেফ আলী গত মঙ্গলবার রাতে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। পরে ভারতের বন্যাবাড়ীয়া সীমান্তে বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। বিএসএফ সদস্যরা তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করলে হানেফ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে ভারতের বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, পারিবারিক বিবাদের কারণে দুদিন আগে রাগ করে ভারতের মধ্যমগ্রামে মামার বাড়ি চলে যান হানেফ আলী। বুধবার সকালে সেখান থেকে নিজের বাড়ি ফেরার পথে ভারতে বন্যাবাড়ীয়া ক্যাম্পের বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। তাদের নির্যাতনের একপর্যায়ে হানেফ আলী মারা যান। নিহতের লাশ ভারতের বনগাঁ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। লাশটি দেশে আনতে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ভারতের বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করছে বলে জানা গেছে।

প্রকাশ :জানুয়ারি ২৩, ২০২০ ৪:১৬ অপরাহ্ণ