প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপ ডাকার আহ্বান রিজভীর

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় খালেদা জিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‌‘রোহিঙ্গা সংকট কোনও দলীয়ভাবে দেখার বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় সংকট। এই সংকট বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন। ফলে জাতীয় সংলাপ ডাকুন।’

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ আহ্বান জানান।

দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সমালোচনা করেন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সংসদে দেওয়া ‘রোহিঙ্গা সমস্যা জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি’−সরকারপ্রধানের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে নিজেদের অনতিক্রম্য দুর্বলতা ও ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতেই আজগুবি কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী’।

রিজভী মনে করেন, ‘উন্মাদ অভিগ্রস্ত না হলে এ ধরনের কথা বলা যায় না।’

বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, সংকট সমাধানে তার (খালেদা জিয়া) অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান।

এসময় বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘জেলখানায় সঠিক চিকিৎসা হয় না, এটা সবাই জানেন। সেখানে স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকায় যেকোনও জটিল রোগ সুচিকিৎসার অভাবে প্রাণহানির পর্যায়ে উপনীত হয়। আমরা মনে করি, এই সরকার অন্ধ প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য তার সুচিকিৎসার বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’

রিজভীর অভিযোগ, ‘বেগম খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিনে সরাসরি বাধা দেওয়া হচ্ছে। নগ্নভাবে আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তার স্বাস্থ্য নিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা এক ভয়াবহ চক্রান্তের বর্ধিত প্রকাশ।’

উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৪০১ পৃষ্ঠার আপিল আবেদন দাখিল করা হয় বলে  জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন।

রিজভী দাবি করেন, ‘গত এক সপ্তাহে কোনও চিকিৎসক বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি। তার হাতে যে ব্যথা ছিল, তা পা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।’ যদিও বুধবার বেগম খালেদা জিয়ার মেজোবোন বেগম সেলিমা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিকিৎসকরা নিয়মিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে আসেন।’ তবে সেলিমার অভিযোগ ছিল, তার বোনের সুচিকিৎসা হচ্ছে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সরকারের শেখানো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিলেও সুচিকিৎসার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।