গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: নির্মাণের এক মাসের মধ্যেই ধসে গেছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার রামশীল ইউনিয়নে একটি সড়ক।
উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের বান্ধাবাড়ি থেকে ত্রিমোহনী সড়কের জহিরের কান্দি স্কুল মোড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি গত মাসে কার্পেটিং করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় নতুন নির্মাণ করা সড়কটির বিভিন্ন স্থান ধসে খালের মধ্যে পড়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের পাশে যে খালটি রয়েছে সেটির ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে প্রটেকশনের জন্য কোন পাইলিং না করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি নির্মাণের জন্য দেড় কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মো: সজীব আহমেদকে ২০১৭ সালের ২১ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল যার কাজ শেষ করার তারিখ ছিল একই বছরের ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি প্রায় কয়েক বছর অসমাপ্তভাবে ফেলে রাখে। পরে মেয়াদ বৃদ্ধি করে চলতি বছরের ১১ ডিসেম্বর কাজ শেষ করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
এলাকাবাসীদের অনেকেই জানান, সড়কটিতে গত তিন বছর ধরে ইট-খোয়া ফেলে রেখেছিল ঠিকাদার। বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা এলজিইডি অফিসে বিভিন্ন পর্যায়ে বলার পরেও কাজ হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত গত মাসে সড়কটি কার্পেটিংয়ের কাজ করে গোপালগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো: সজীব আহমেদ। কিন্তু এক মাসের মধ্যেই রাস্তাটি ভারী বৃষ্টিতে ধসে যাওয়ায় কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
কোটালীপাড়া উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক রিপনচন্দ্র মল্লিক বলেন, ‘ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি লাভের জন্য কাজ নিম্নমানের করার চেষ্টা করতেই পারে। তাই বলে যারা কাজটি বুঝে নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন, সেই সব কর্মকর্তারা যদি সড়কটি নির্মাণের সময় সঠিকভাবে তদারকি করতেন তাহলে সড়কটি এভাবে ভেঙ্গে পড়ত না। এখানে ঠিকাদারদের চেয়ে কর্মকর্তাদের গাফিলতিকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাজটি কয়েক বছর ফেলে রাখায় এমনিতেই জনগণের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। তারপরে এখন নির্মাণের এক মাসের মধ্যেই খালের ভিতরে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ধসে পড়ল।’
এব্যাপারে কোটালীপাড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী দেবাশীস বাগচী বলেন, ‘আমি রাস্তাটি সরেজমিনে দেখে এসেছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে এখনো বিল প্রদান করা হয়নি। তারা সড়কটি সঠিক ভাবে টেকসই করে মেরামত করে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের কোন প্রকার বিল প্রদান করবো না। ইতোমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটি মেরামতের কাজ শুরু করেছেন বলে আমাদেরকে তারা জানিয়েছেন।’