আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশে অপ্রয়োজনীয় সিজারের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রসূতিদের অপারেশন ৫১ শতাংশ বেড়েছে। শুক্রবার সেভ দ্য চিলড্রেন এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, গত বছর বাংলাদেশে আট লাখ ৬০ হাজার অপ্রয়োজনীয় সিজার হয়েছে। আবার ব্যয় বহন করতে অক্ষম কিংবা সিজারের সুযোগ না পাওয়ায় তিন লাখ নারী এই সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অপ্রয়োজনীয় সিজার মা ও শিশুকে অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকিতে ফেলা সত্ত্বেও দেশের ধনী সম্প্রদায় রেকর্ড হারে সিজারের দিকে ঝুঁকছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বাবা-মায়েরা ৪৮ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার সিজারের পেছনে খরচ করেছেন। অথচ চিকিৎসাগতভাবে এগুলো ছিল সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। প্রতিটি সিজারের পেছনে গড়ে খরচ হয়েছে ৬১২ মার্কিন ডলার। ২০১৮ সালে ৭৭ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় আট লাখ ৬০ হাজার সিজার ছিল চিকিৎসা অনুযায়ী অপ্রয়োজনীয়। ২০১৬ সালের তুলনায় এই সংখ্যা পাঁচ লাখ ৭০ হাজার বেশি।
২০০৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সিজারের হার চার থেকে শতাংশ বেড়ে ৩১ শতাংশে পৌঁছে। অথচ প্রতি বছর যেখানে তিন লাখ নারীর সিজার খুবই প্রয়োজন সেখানে তারা এই সুযোগ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ৮০ শতাংশ শিশুর জন্ম বেসরকারি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে হচ্ছে। চিকিৎসা খাতে দুর্বল নজরদারির অংশ হিসেবে এটি ঘটছে। একইসঙ্গে এর জন্য কিছু অসাধু চিকিৎসক দায়ী, যাদের কাছে সিজার মানে হচ্ছে লাভজনক ব্যবসা।
সেভ দ্য চিলড্রেন এ ব্যাপারে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি, সিজার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মধ্যে ভারসাম্য এবং মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবায় আরো বেশি অনুদানের আহ্বান জানিয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. ইশতিয়াক মান্নান বলেছেন, ‘এই জনপ্রিয়তার স্ফিতি এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যেখানে এটা অনেক বেশি সহজ সেই বিশ্বাস নিয়ে অথবা চিকিৎসকের ভুল পরামর্শে পরিচালিত হয়ে বিপুল সংখ্যক মাকে অপ্রয়োজনীয় সিজারের জন্য সারিতে দাঁড়ানো পাচ্ছি। অথচ সেই দরিদ্র নারী যাদের এটার প্রয়োজন অনেক বেশি তারা এই সুযোগ পাচ্ছে না। এটা বিস্ময়কর।’