ডেস্ক রিপোর্ট:
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত নতুন নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে জাতীয় সংলাপ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
এছাড়াও দ্রুততম সময়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা এবং নির্বাচনের সময় যেসব এলাকায় বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন, সেসব এলাকা পরিদর্শনে যাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে সংলাপ কবে শুরু হবে, সে বিষয়ে কোনো সময়সীমা জানানো হয়নি।
মঙ্গলবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসনের বেইলি রোডের বাসায় বৈঠক হয়।
পরে ড. কামাল বলেন, বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জনগণ যে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি বাছাই করে নিতে পারত, সে নির্বাচন হয়নি। পরে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংলাপ, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা এবং নির্বাচনের সময় যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব এলাকা পরিদর্শনে যাব। এরই অংশ হিসেবে এক সপ্তাহের মধ্যে সিলেটের বালাগঞ্জে যাব।’
ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান বিএনপির মহাসচিব। এতে বলা হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেশের মালিক জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অপব্যবহার করে এবং সেনাবাহিনীর কার্যকর ভূমিকাকে নিষ্ক্রিয় করে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে।
নীলনকশা অনুযায়ী ভোটের পূর্বরাতে ইসি পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশ দিয়ে, সরকারি সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনীকে ব্যালট পেপারে নৌকা ও লাঙ্গল মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে রাখতে সাহায্য করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠায় জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করেছে। গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে- জনগণের শাসন, অর্থাৎ জনগণ নিজেদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনা করবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের সব ক্ষমতা ও দায়িত্ব ইসির।’
ইউএন কনভেনশন অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের মতে, শুধু সাংবিধানিক অধিকার নয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের মানবাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড গুরুতর অপরাধ।
বৈঠকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।