২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:৫০

বই মেলার শেষ দিন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নতুন বইয়ের মাদকতায় কখন যে কেটে গেল পুরো মাস বোঝাই গেল না। পরিচ্ছন্ন সুন্দর মেলায় স্নিগ্ধ ছিমছাম পরিবেশ। নতুন বই, ঝলমলে প্রচ্ছদ, লেখক-পাঠকের আনাগোনায় জমজমাট ছিল পুরো মাস। আজ মেলার শেষ দিন। মেলার দ্বার খুলবে বেলা তিনটায়, চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। শেষবারের মত বইপ্রেমীরা আসবেন বইমেলায়। আরো কিছু কেনার বাকি যা রয়েছে সংগ্রহ করবেন। আর না কিনলেই বা কী! বই তো পরে দোকানে পাওয়া যাবেই। কিন্ত এই আড্ডামুখর পরিবেশের জন্য তো প্রতীক্ষায় কাটবে সামনের পুরোটা বছর।
শেষ সময়ে বই বিক্রির অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রকাশকরা। মিশ্র প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন অনেক স্টল মালিক। অবসর প্রকাশনীর প্রকাশক আলমগীর রহমান বললেন, নানা অসঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও এবার মেলা ভালো হয়েছে। বইয়ের বিক্রিও বেশ ভালো। অন্য প্রকাশের অন্যতম প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম বলেন, এবারের মেলায় বিক্রি ভাল। বিক্রির শীর্ষে রয়েছে হুমায়ুন আহমেদের বই। আগামী প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, তাদের স্টলে বিক্রির সেরায় রয়েছে উপন্যাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কগ্রন্থ।
গতকাল বইমলায় নতুন বই এসেছে ২০২টি। স্টলগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। বিক্রয়কর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছিল বইমেলায়। সবার হাতে হাতে বই। স্টলে বইপ্রেমীদের ভিড়। বই কিনে সবাই হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন। আজ সন্ধ্যা ৬টায় রয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান। বিকেল চারটায় মূল মঞ্চে রয়েছে ‘বাংলাদেশের আদিবাসী’ শীর্ষক আলোচনা সভা।
হুমায়ুন আজাদ স্মরণে প্রতিবাদী সমাবেশ, বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের উপর মৌলবাদী চক্রের  সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকী স্মরণে লেখক-পাঠক ফোরাম প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের তথ্যকেন্দ্রের সামনে। আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আব্দুল মান্নান চৌধুরী, কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ব্যক্তিকে হত্যা করে তাঁর আদর্শকে মেরে ফেলা যায় না। কারণ হুমায়ুন আজাদের মৃত্যু হলেও তাঁর বই বিক্রি থেমে নেই। বক্তারা অবিলম্বে  হুমায়ুন আজাদের হত্যাচেষ্টার বিচার দাবি করেন।
লিটল ম্যাগাজিন চত্বর: একুশের গ্রন্থমেলার বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে লিটল ম্যাগাজিন চত্বর। স্টলগুলোতে সারাক্ষণই ক্রেতার ভিড়। সারাদেশের লেখকদের মিলনমেলায় পরিণত হচ্ছে এই চত্বর। বাংলা একাডেমির বর্ধমান ভবনের পাশে বহেড়া তলায় এই চত্বরে একশ চব্বিশটি স্টল রয়েছে লিটল ম্যাগাজিনের। এখানে রয়েছে শংখচিল, ঘাসফুল, বিবর্তন, বৈঠক, দাগ, ছোট কাগজ, শালুক, রোদ্দুর, শ্লোক, মেলবন্ধন, কাশবন, ম্যাজিক লণ্ঠন, মেঘ, মাটি, চিরকূট, লোকসহ বাহারি নামের সব স্টল।
গতকাল মেলায় ‘বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা এবং বাংলাদেশে প্রকাশনার মান উন্নয়নের সমস্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ফজলে রাব্বি। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খান মাহবুব। আলোচনায় অংশ নেন বদিউদ্দিন নাজির, রেজাউদ্দিন স্টালিন ও মোস্তফা সেলিম। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন এস. এম. মাহিদুল ইসলাম।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮ ২:১৭ অপরাহ্ণ