আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যতক্ষণ না তুরস্ক তার লক্ষ্যে পৌঁছাবে, ততক্ষণ ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যপ এরদোগান। শুক্রবার রাজধানী আঙ্কারাতে ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টির প্রাদেশিক প্রধানদের বৈঠকে এরদোগান এসব কথা বলেন। এরদোগান বলেন, ‘আমরা ম্যানবিজকে সন্ত্রাসী মুক্ত করার ব্যাপারে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ইরাকের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত যতক্ষণ না পর্যন্ত সন্ত্রাসীমুক্ত হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আফরিন দখল করছি না। প্রকৃতপক্ষে, ওই এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার মাধ্যমে এর প্রকৃত মালিকদের জন্য একটি বাসযোগ্য স্থান তৈরি করার চেষ্টা করছি।’ তিনি আরো বলেন, যারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুর্কিদের দৃঢ়সংকল্প বুঝতে চায়নি, এই অপারেশন তাদের জন্য একটি সুস্পষ্ট সতর্ক বার্তা।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আফরিন অঞ্চলে সিরিয়ায় কুর্দি ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তুর্কি অভিযান সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের বহুবিধ সন্ত্রাসীদের যুদ্ধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ওয়াইপিজিকে তুরস্ক একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে মনে করে থাকে। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওয়াইপিজি মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ শুরু হওয়ার পর থেকে এরদোগান বলে আসছেন যে তুর্কি বাহিনী পূর্বদিকে ম্যানবিজ শহরের দিকে অগ্রসর হবে। তাদের এই পদক্ষেপ সেখানে নিয়োজিত মার্কিন সৈন্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এদিকে, কুর্দি ও আরব মিলিশিয়াদের মিত্র সিরিয়ার ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যেকোনো বৃহত্তর তুর্কি আক্রমণে ‘যথাযথ জবাব’ দেয়া হবে।
ম্যানবিজ অভিযুখে তুর্কি বাহিনীর যেকোনো অভিযান উত্তর সিরিয়াকে স্থিতিশীল করার মার্কিন প্রচেষ্টাকে হুমকিতে ফেলে দিতে পারে। কুর্দি অধ্যুষিত আফরিনের ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) পূর্ব ম্যানবিজ অঞ্চলের অবস্থান। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসাবে সিরিয়ায় প্রায় ২,০০০ মার্কিন সৈন্য অবস্থান করছে।
ম্যানবিজের অভ্যন্তর এবং এর চারপাশে তুরস্ক ও মার্কিন সমর্থিত বিদ্রোহীদের একে অপরের ওপর আক্রমণ করা থেকে বিরত রাখতে সেখানে মার্কিন বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়াও, ওই এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষণ মিশন পরিচালনা করছে। সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীকে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ও বিমান সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ওয়াশিংটন আঙ্কারাকে ক্ষুব্ধ করেছে। তুরস্ক মনে করে যে ওয়াইপিজি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি বর্ধিত অংশ। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পিকেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় কুর্দিশ অঞ্চলে ভয়াবহ বিদ্রোহ সৃষ্টি করেছে।
গত শনিবার থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী দল কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে ‘অলিভ ব্রাঞ্চ’ নামে অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক সেনাবাহিনী। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আফরিন থেকে কুর্দিস পিপলস প্রটেকশন ইউনিটকে (ওয়াইপিজি) বিতাড়িত করতে স্থল ও আকাশ পথে অভিযান শুরু করে তুর্কি বাহিনী। সূত্র: রয়টার্স
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ