কৃষি ডেস্ক :
প্রতিকূল আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটের কারণে চলতি মওসুমে বোরো ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছে রংপুর মহানগরীসহ পুরো জেলার কৃষক। ফলে নুতন ধান ঘরে আসার সম্ভাবনাতেও হাসি নেই তাদের মুখে। সার্বক্ষণিক হতাশার ছাপ।
রংপুর কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক অফিসার আবু সায়েম জানান, চলতি মওসুমে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় চার লাখ ৯৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু অর্জিত হয়েছে পাঁচ লাখ ১৯ হাজার ১৩২ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ১৩২ হেক্টরে।
রংপুরের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, বোরো ধান কর্তনের পুরো মওসুমে রংপুরে সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচি চালু থাকায় শ্রমিকদের একটি অংশ সেখানে শ্রমিক বিনিয়োগ করছে। যার প্রভাব পড়ছে কৃষি ক্ষেত্রে। কৃষকদের মতে এ সময় কর্মসৃজন কর্মসূচি স্থগিত থাকলে ওই শ্রমিকেরা ধান কর্তনে শ্রম দিত। এতে কিছুটা হলেও শ্রমিক সংকট হ্রাস পেত। পীরগঞ্জের গুর্জিপাড়া এলাকার কৃষক বখতিয়ার রহমান ও মহেশপুরের কৃষক নুর আলম মিয়া জানান, এখন বোরো ধান কাটার মওসুম। অথচ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অবিরাম বর্ষণে অনেক স্থানের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
অনেক জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তারপরেও কৃষকদের মধ্যে প্রতিনিয়ত শিলাবৃষ্টি আতঙ্ক লেগেই রয়েছে। আবহাওয়ার এ পরিস্থিতিতে কৃষকেরা জরুরিভাবে ধান ঘরে উঠানোর চেষ্টা করলেও তা পারছেন না। এ ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিক। গ্রামগুলোতে যে সীমিত সংখ্যক শ্রমিক রয়েছে তারা জোট বদ্ধ হয়ে অনেকটাই সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। বাড়িয়ে দিয়েছে ধান কাটার মজুরি। এর ফলে কৃষকদেরকে প্রতি ৫০ শতক জমির ধান কর্তনের জন্য সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে।
রংপুর তামপাট এলাকার কৃষক হুমায়ন রশীদ শাহিন জানান, তিনি চার একর জমিতে বোরো ধান উৎপাদন করেছেন। এখন পর্যন্ত অনেক কষ্টে অর্ধেক ধান ঘরে তুলতে পারলেও পুরো ধান ঘরে তুলতে পারেননি। তার মতে, এ অর্ধেক ধান উৎপাদনে তার খরচ পড়েছে প্রায় ৪২ হাজার টাকা। আর ধান পেয়েছেন ৯৫ মণ। বর্তমান ৫৫০ টাকা প্রতিমণ হিসাবে যার বাজার মূল্যে প্রায় ৫২ হাজার টাকা। এ লভাংশ ওই কৃষকের জন্য হতাশা জনক।
দৈনিক দেশজন /এন এইচ