নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ইসলামিক নিউজ অনলাইনের সম্পাদক সুমন শিকদার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পূর্ব বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. ফয়সাল আহমেদ ও মো. জহিরুল ইসলাম জনি। তাদের কাছ থেকে সুমনের ব্যবহৃত কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রোববার রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ফয়সাল ও জহিরকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, ভিকটিম সুমনের সঙ্গে তাদের এক সময় সুসম্পর্ক ছিল। তারা একসাথেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ভুয়া ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতো।
আবদুল বাতেন বলেন, নিহত সুমন নিজেকে ইসলামিক নিউজ নামে একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক দাবি করতো। ফয়সালের সাথে তার সুসম্পর্ক থাকায় তাকে নিউজ পোর্টাল করে অনেক টাকা আয় করা যাবে বলে প্রলোভন দেখায় সুমন। এ লোভে পড়ে ফয়সাল তার একটা টিনশেড বাড়ি, মোটরসাইকেল ও ক্যামেরা বিক্রি করে। কিন্তু সুমন কৌশলে সেই বাড়ি বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করে। এটা জানতে পেরে ফয়সাল ক্ষিপ্ত হয়ে সুমনের কাছে ৪/৫ লাখ টাকা দাবি করে। সুমন এই টাকা দিতে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করতে থাকে। এই পাওনা টাকা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ফয়সাল ও সুমনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে বাতেন বলেন, ফয়সাল ও জনি ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফয়সাল ও জনি ভিকটিম সুমনের ইসলামিক নিউজের অফিসে যায়। একসাথে নাস্তা করার পর সুমনের কফিতে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয় ফয়সাল। কফি পান করে সুমন ঘুমিয়ে পড়লে দড়ি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হতে সুমনের নাক মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে দেয়া হয়। পরে সুমনের লাশ খাটের নিচে রেখে তার ব্যবহৃত কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় ফয়সাল-জনি।
প্রসঙ্গত, গত ৯ মার্চ বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে উত্তর যাত্রাবাড়ীর ৩১ নং শহীদ ফারুক রোডের একটি ৩য় তলা ভবন থেকে সুমন শিকদারের হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি