২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:২৪

পীরগাছায় হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পর রহস্য উদঘাটন

মো: গোলাম আযম সরকার, (রংপুর):

অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আল আমিন নয়ন (২২) হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পর রহস্য উদঘাটন হলো। প্রেমিকার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে হত্যা করে রেললাইনে লাশ রেখে মৃত বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে এই খুনে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছেন।
পিবিআই রংপুর অফিস সূত্রে জানা যায়, তাদের তদন্তে দুইজনকে গেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন পীরগাছার তাম্বুলপুর গ্রামের মৃত জলিল ফকিরের ছেলে জুয়েল (২৮) এবং একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে তুষার (২২)। এর মধ্যে জুয়েল শুক্রবার আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক হোসেন আলী জানান, পীরগাছা উপজেলার সোনারায় রফিকুল ইসলামের ছেলে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আল আমিন নয়নের (২২) সাথে একই উপজেলার তাম্বুলপুর ফকিরপাড়া গ্রামের জলিল ফকিরের মেয়ে রুনি আখতারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু রুনির পরিবার এই প্রেম মেনে নেয়নি। এ কারণে হত্যাকাণ্ডের আগে রুনির পরিবার থেকে নয়নকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছিল।
ঘটনার দিন ২০১৪ সালের ৪ জুন নয়ন কলেজে ছুটিতে বাড়িতে আসে। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে নয়নকে তার প্রেমিকা রুনি মোবাইলে ফোন করে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। নয়ন তার বন্ধু তুুষারকে সাথে নিয়ে রুনিদের বাড়িতে যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরো জানান, সেখানে গেলে তুষার ও জুয়েলসহ কয়েকজন নয়নকে আটক করে। এ সময় নয়নকে অস্ত্র উঁচিয়ে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে জুয়েল ও তুষারসহ কয়েকজন ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপায়। একপর্যায়ে নয়নকে মাটিতে ফেলে জুয়েল ও তুষারসহ অন্যরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে। পরে তারা লাশ একটি বস্তায় ভরে আগে থেকে সংগ্রহে রাখা একটি ভ্যানে করে পীরগাছা থেকে অন্নদানগর রেল লাইনের সুখানপুকুর মৌজার রেলব্রিজের দক্ষিণ পাশে রেললাইনে নিয়ে যায়। ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে লাশটি রেললাইনে ফেলে রাখে এবং ট্রেনে কাটা নিশ্চিত করে সবাই বাড়ি চলে যায়। পিবিআই রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, তদন্তভার পাওয়ার পর নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে এজাহারভুক্ত আসামি জুয়েলকে ২৩ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার এবং জড়িত অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করে। পরে সে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দী দেয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৪ নভেম্বর অন্য আসামি তুষারকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি জানান, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সব ক্লু পেয়ে গেছি। আরো যারা এ খুনের সাথে জড়িত ছিল তাদের নাম ও পরিচয় আমরা পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাবে না। এখন বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :নভেম্বর ২৬, ২০১৭ ৫:২১ অপরাহ্ণ