নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে প্রথম ব্রি-৫ জাতের ধানের চাষ করা হয়েছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। কৃষকেরা একই সাথে এই উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধান চাষ করার পাশাপাশি এ ধানের বীজ উৎপাদন করেও লাভবান হতে পারবেন। কৃষি বিজ্ঞানীরা মনে করেন দেশে যেসব হাইব্রিড ধানের চাষ করা হয়ে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ব্রি-৫ জাতের ধানের। টুঙ্গিপাড়ার দুই কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে এ ধানের সফল চাষ করায় অন্যান্য কৃষকেরাও আগামীতে এ জাতের ধান চাষের আগ্রহ দেখিয়েছেন।
বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল এই ধানটি ২০১৬ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদন পেলেও এই বোরো মৌসুমেই প্রথম গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আবাদ করা হয়। ব্রি-এর বিভিন্ন পর্যায়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের মতে, প্রতি বছর দেশে কোটি কোটি টাকার হাইব্রিড ধানের বীজ আমদানি হয়ে থাকে। দেশেই যদি কৃষকরা তাদের প্রয়োজনমত হাইব্রিড ধানের বীজ উৎপাদন করতে পারেন তাহলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে বিদেশে যাবে না। এ জাতের ধান হেক্টর প্রতি উৎপাদন ৯ টন বা একরে ৯০ মন। শতকরা ৯ ভাগ প্রোটিন সমৃদ্ধ এ ধান ১শ’৪৫ দিনের মধ্যে কৃষকেরা তাদের ঘরে তুলতে পারবেন। টুঙ্গিপাড়ার কৃষক বাকা শেখ ও জালাল শেখ জানান, ব্রি-৫ জাতের ধানের চাষ করে তারা লাভবান হয়েছেন। ফলনও হয়েছে ভাল। তাদের দেখাদেখি এলাকার অন্যান্য কৃষকেরা আগামী বোরো মৌসুমে এ জাতের ধানের চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুরের পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. জাহাঙ্গীর কবীর জানান, দেশিয় আবহাওয়ায় উদ্ভাবিত বিধায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং এ জাতের স্থানীয়ভাবে বীজ উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক। এ জাতের ধানের চাল চিকন ও ভাত ঝরঝরে। এটির আবাদ যদি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তা’হলে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন কোম্পানির বিদেশি হাইব্রিড ধানের বীজ আমদানি হ্রাস পাবে। এদিকে টুঙ্গিপাড়ায় ব্রি-৫ ধানের চাষ ও বীজ উৎপাদন করতে কৃষক প্রশিক্ষণ এবং মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। এ ধান কাটা উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শেখ রাসেল শিশুপার্ক সংলগ্ন মাঠে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। টুঙ্গিপাড়ার কৃষকদের ব্রি-৫ জাতের ধান চাষের পদ্ধতি ও এ জাতের ধানের বীজ উৎপাদনের কলাকৌশল ও গুণাগুণ সম্পর্কে বিশেষ ধারণা দেওয়া হয়।
এন/এইচ =দেশ জনতা
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

