২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:১৩

ডাকসু প্রতিনিধিদের সময় কি বাড়ছে?

দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষা শেষে গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন। এরপর ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন ভিপি নুরুল হক নুর এবং জিএস গোলাম রাব্বানীসহ অন্য আরও ২৩ জন প্রতিনিধি। সে হিসাবে তাদের ২০১৯-২০ সেশনের কার্যকাল শেষ হবে আগামী ২৩ মার্চ।

তবে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে ডাকসুর কার্যক্রম আরও ৯০ দিন বাড়ানোর প্রস্তাব উঠতে পারে ডাকসুর সভায়। যা গঠনতন্ত্রেও রয়েছে।

ডাকসুর গঠনতন্ত্রের (সংশোধিত) ৬ এর ‘গ’ ধারায় বলা আছে, ‘সংসদে নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পদাধিকারগণ ৩৬৫ দিনের জন্য কার্যালয়ের দায়িত্বপালন করবেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন না করা যায়, তাহলে কার্যনির্বাহী পদাধিকারগণ অতিরিক্ত ৯০ দিন অথবা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ব পর্যন্ত, যেটা আগে, দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ামাত্র আগের সংসদ বাতিল হয়ে যাবে।’

ডাকসুর একাধিক প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৯০ দিন পর্যন্ত সময়সীমা বাড়াতে তারা একটি সভার আয়োজন করবেন। সেখানে অধিকাংশের মত আসলে ৯০ দিন সময় বাড়ানো হবে।

আবার প্রতিনিধিদের কেউ কেউ সময়সীমা বাড়ানোর বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, ডাকসু ২৩ মার্চই ক্লোজ হবে। সময়সীমা বাড়ানোর পক্ষে নন তারা। এ বিষয়ে ভিপি নুরুল হক নুর এবং জিএস গোলাম রাব্বানীর সদিচ্ছা রয়েছে বলেও একজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর (ভিপি) সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর  বলেন, ‘সময়সীমা বাড়ানোর কথা আমিও অনানুষ্ঠানিকভাবে শুনেছি। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। সরাসরি কেউ আমাকে বলেনি। ওদের (ছাত্রলীগ প্যানেলের প্রতিনিধি) মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে শুনেছি। ৮ ফেব্রুয়ারি কার্যনির্বাহী সভায় সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে আলোচনা করতে চাইলে ছাত্রলীগ প্যানেলের সদস্যরা বিরোধিতা করেন। তখন ভিসি স্যারও কোনও মন্তব্য করেননি। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, এ ডাকসু প্রতিনিধিরা আরও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যথায়, ডাকসু নির্বাচন হবে না, এরকম-ই কিছু ইন্ডিকেট করে।’

সময়সীমা বাড়ানোর পক্ষে নন-জানিয়ে ভিপি নুর আরও বলেন, ‘আামি সময় বাড়ানোর পক্ষে না। আমি চাই, দায়িত্ব শেষ হওয়ার মধ্যেই যেন আরেকটি নির্বাচন হয় এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারি। নির্বাচন হওয়ার মাধ্যমে কিছুটা হলেও সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার পথ সৃষ্টি হয়েছে। তাই নির্বাচনের ধারাবাহিকতা জরুরি।’

জানতে চাইলে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের এখনও কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়নি। ডাকসুর ডেমোক্রেটিক বডির সদস্য সবাইকে নিয়ে একটি মিটিং করা হবে। তারপরে যদি কেউ সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়টি উত্থাপন করে, তখন মেজরিটি যদি চায়, তাহলে তো প্রস্তাব আকারে তা ডাকসুর সভাপতির কাছে যাবে। আর ৯০ দিন সময়বৃদ্ধির বিষয়টি গঠনতন্ত্রেও আছে। তবে, আমরা চাই না সময়সীমা বাড়ানো হোক।’

নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে প্রস্তুতি নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য অনেক প্রস্তুতির বিষয় আছে, তা প্রশাসনের নেওয়া প্রয়োজন। নির্বাচন নিয়মিত হোক, এটা আমিও চাই।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘যদি নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হয়, তাহলে ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৯০ দিন পর্যন্ত ডাকসু চলবে। আর যদি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়, তাহলে তখনই আমরা সভা ডেকে ডাকসুর বডিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করবো। তবে, ডাকসুর সময়সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদাধিকার বলে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে বলেন, ‘যথা সময়ে সবকিছু হবে। এখন কিছু জানি না, অনুমান করে মন্তব্য করা যাবে না। যেটা যেখানে আছে, সেটা সেখানে থাকুক।’ সব বিষয় দেখে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০ ৫:২০ অপরাহ্ণ