২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:০১

এলিয়েন ডে পালিত হবে ২৬ এপ্রিল

বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক

এই মহাশূণ্যে একমাত্র পৃথিবীতেই কি প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে? আগে কথাটি অবাস্তব মনে হলেও হালের বিজ্ঞান বলছে, না! এই মহাবিশ্বে পৃথিবীর মতো একাধিক গ্রহ রয়েছে। আর সেসব গ্রহে প্রাণ না থাকার কোনো কারণ নেই। হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রপুঞ্জে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য গ্রহের মধ্যে প্রাণ না থাকাটাই বরং অবাস্তব! তবে লক্ষ কোটি আলোক বর্ষ দূরের সেসব গ্রহে গিয়ে খবর নেয়া আধুনিক বিজ্ঞানের পক্ষে সম্ভব নয়।

তাই বাস্তববাদী বিজ্ঞানীরা মহাকাশে প্রাণের বিষয়ে আশাবাদী হলেও নিশ্চিত নয়। তবে একটি পক্ষ ঠিকই বিশ্বাস করেন, মহাকাশে এই সভ্যতার চাইতেও উন্নত প্রাণী আছে। এবং তারা পৃথিবীতেও এসেছে।

তাদের দাবি, এরা মানুষ হোক বা উন্নত অন্য জাতের প্রাণীই হোক, মানব সভ্যতার উন্নতিতে তাদের অবদান রয়েছে। এমনকি তারা নিয়মিত নজরদারির মধ্যেও মানুষকে রেখেছে।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা কিংবা ইউরোপের ইসা’র মতো শক্তিধর সংস্থার বিজ্ঞানীরা বিষটিকে অস্বীকার করলেও এক দল বিজ্ঞানী তা মানতে নারাজ। তারা এলিয়েন এবং ভিনগ্রহের অজানা মহাকাশযান ইউএফও সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস রাখেন।

শুধু বিজ্ঞানীদের মধ্যেই যে এই বিশ্বাস রয়েছে তা নয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ইউকে এক জড়িপে দেখেছে, যুক্তরাজ্যের অন্তত অর্ধেক মানুষই বিশ্বাস করেন মহাকাশে এলিয়েনের অস্তিত্ব রয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এসব বিশ্বাসীরা আগামী ২৬ এপ্রিল ‘এলিয়েন ডে’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এলিয়েন ডে হিসেবে দিনটিকে বেঁছে নেয়ার অবশ্য বেশ কিছু কারণও রয়েছে। যেমন, ওইদিন মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্ব জানার জন্য নাসা প্রথম তাদের হান্টার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে।

এক্সপ্রেস ইউকে’র প্রতিবেদনে বলা হয়, দিনটি পালনে বিশ্বব্যাপী কোনো ঘোষণা না থাকলেও অনেক টিভি চ্যানেল’ই নাকি ২৬ এপ্রিল বিজ্ঞান কল্পকাহিনী নির্ভর ছবি প্রচার করবে। এছাড়া বেশ কিছু স্থানে সমাবেশ ও আলোচনা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হবে।

গত দু’বছর ধরে সীমিত পর্যায়ে বিশ্বব্যাপী এই দিনটিকে এলিয়েন দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। গত বছরও দিনটিকে সমর্থন জানিয়ে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বিশেষ উদ্যোগও নেয়। এদের মধ্যে ছিল বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান 20th Century Fox.

এছাড়া গত বছর সুইডেন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভ্যাটিকান, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহরে ওই দিন বিশেষ সমাবেশসহ নানা অনুষ্ঠান পালন করেন এলিয়েন বিশ্বাসীরা।

এলিয়েনদের পৃথিবীতে আসাকে সম্মান জানিয়ে দিবস পালন করার ঘটনা হাস্যকর শোনালেও অনেক বিজ্ঞানী কিন্তু ওই ধারণার জোড়ালো প্রমাণ পাচ্ছেন। এই বিশ্বাসের ফলেই মহাকাশে বুদ্ধিমান প্রাণী এবং বাসযোগ্য পৃথিবীর খোঁজে একাধিক অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীনসহ অনেক শক্তিধর রাষ্ট্রই এখন মহাকাশে রেডিও সংকেত পাঠাচ্ছেন। আবার দূর মহাকাশ থেকে উন্নত ও বুদ্ধিমান প্রাণীদের পাঠানো সংকেত ধরতে একাধিক মান মন্দিরও স্থাপন করা হয়েছে।

গত বুধবার অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল নাসা এমন এক সার্ভে স্যাটেলাইট (Transiting Exoplanet Survey Satellite) মহাকাশে পাঠিয়েছে যা নাকি কেপলার দূরবীক্ষণ যন্ত্রের চেয়েও ৪শ’ গুণ বেশি শক্তিশালী। আগামী দু’বছর এটি দূর মহাকাশে প্রাণের উপযোগী গ্রহের সন্ধান করবে।

যন্ত্রটির অন্যতম নির্মাতা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অধ্যাপক জেনিফার বার্ট এক্সপ্রেস ইউকে’কে জানিয়েছেন, মহাকাশে পৃথিবীর ন্যায় কোনো গ্রহ আছে কিনা তা জানতে এই স্যাটেলাইট দারুণ কাজে দেবে। আগামী দু’বছরের মধ্যেই অসংখ্য গ্রহের তথ্য পাওয়া যাবে যা আগে কখনও পাওয়া যায়নি।

এমন অসংখ্য গ্রহের তথ্য পাওয়া গেলে গবেষণার পথ আরো বিস্তৃত হবে বলে জানান তিনি। এরফলে জোতির্বিজ্ঞানীদের প্রায় প্রত্যেকের ভেতরেই মহাকাশে পৃথিবীর মতো বসবাস উপযোগী গ্রহের সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে বলে তার আশা।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :এপ্রিল ২৪, ২০১৮ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ