২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:২৫

বিপিও সেক্টরে এক লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্তমানে বাংলাদেশ বিপিও খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। প্রায় ৪০ হাজার তরুণ-তরুণী এখন এই সেক্টরে কাজ করছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে আমরা ২০২১ সাল নাগাদ এই খাতে এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারব বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। আজ রোববার বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৮ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার ইন্টারনেটের দাম কমিয়েছে, অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ করেছে। এবং দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল আর টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবলের কারণে ইন্টারনেট নিয়ে অনিশ্চয়তারও অবসান ঘটানো হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থানকে তুলে ধরার লক্ষ্যে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে তৃতীয় বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে দু’দিনের এ সামিট।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা ৯৯৯ সেবার চমৎকার সাফল্য দেখেছি। কয়েকদিন আগে আমি ৩৩৩ সেবা কার্যক্রমও উদ্বোধন করেছি। এসবই কিন্তু সরকারি কাজ বেসরকারি উদ্যোগে করিয়ে নেয়ার উদাহরণ। কেবল আউটসোর্সিংয়ের বিষয় নয়, সরকারি সফটওয়্যার ক্রয়ের ক্ষেত্রেও দেশীয় সফটওয়্যারকে প্রাধান্য দেয়ার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করবো। আমাদের দেশে তৈরি সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন বিদেশীরা আর আমাদের দেশের মানুষ সেগুলো ব্যবহার করতে পারবে না, সেটা কেমন করে হয়। দরকার হলে সরকারি সফটওয়্যার কেনার একটি নীতিমালা করবো।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিশ্বব্যাপী বিপিও খাতের বাজার প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের বিপিও ব্যবসার বাজার ইতিমধ্যেই শত মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে সকলের সামনে তুলে ধরা এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেয়ার এখনই সময়। এই খাতকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হলে এটি আমাদের দেশের উন্নয়নের গতিকে আরো ত্বরান্বিত করবে এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। ২০০৮ সালে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ, বর্তমানে সেই সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। কেবল গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ানোই নয়, ব্যবহারকারীদের জন্যে ইন্টারনেট যেন নিরাপদ হয় সেজন্যেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০০৫ সালে যে ব্যান্ডউয়িথের দাম ছিল ৭৫ হাজার টাকা, সরকার এখন তা এক হাজার টাকার নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। মোবাইল ফোন ইন্টারনেটে আমরা ফোরজি সেবা চালু করেছি; অচিরেই একে ফাইভজি-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মোট জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ। এ হিসেবে তরুণদের সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। এই তরুণ জনগোষ্ঠীই আমাদের সম্পদ। বিপিও খাতে এখন বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষ জনবল প্রয়োজন। আমরা যদি এই তরুণদের প্রশিক্ষিত করে এই খাতে কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরা খুব দ্রুতই বিপিওর বিশ্ব-বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অর্জন করতে পারবো। তিনি আরও বলেন, তরুণ জনগোষ্ঠীকে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের অর্থনীতিকে উন্নত করতে পেরেছে। আমাদের তরুণদের কর্মসংস্থানের হার বাড়াতে বাংলাদেশ সরকার আইসিটি খাতে তাদের প্রশিক্ষণের জন্যে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে বিপিও খাতে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে কয়েক বছরের মধ্যেই দেশে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। বর্তমানে বিপিও খাতে প্রায় ৫০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা আশা করছি, ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ১ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

উদ্বোধন পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদসহ অতিথিরা সামিট প্রঙ্গণ ঘুরে দেখেন।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থানকে তুলে ধরার লক্ষ্যে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই দিনের এ আয়োজন।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

প্রকাশ :এপ্রিল ১৫, ২০১৮ ৭:২৯ অপরাহ্ণ