২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:২১

ফেসবুক-ব্ল্যাকবেরির যুদ্ধ

বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক :

ফেসবুকে যে নিয়মিত মেসেজ পাঠাচ্ছেন, তার পেটেন্টই কার? কানাডার স্মার্টফোন নির্মাতা ব্ল্যাকবেরি দাবি করেছে, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিংয়ের অনেক পেটেন্ট তাদের। ফেসবুক এগুলো অনুমতি না নিয়েই ব্যবহার করছে এবং কোনো অর্থ পরিশোধ করছে না। পেটেন্ট ভঙ্গের অভিযোগে তাই ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ব্ল্যাকবেরি কর্তৃপক্ষ।

একসময় স্মার্টফোনের বাজারে ভালো অবস্থানে ছিল ব্ল্যাকবেরি। কিন্তু ২০১৬ সালে স্মার্টফোন হার্ডওয়্যার তৈরি থেকে সরে আসে প্রতিষ্ঠানটি। অন্য প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স বিক্রি করে নিজে সফটওয়্যার নির্মাতা হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ব্ল্যাকবেরির কাছে সফটওয়্যার বিষয়ে অসংখ্য পেটেন্ট আছে, যার মধ্যে কতগুলো পেটেন্ট আধুনিক স্মার্টফোন মেসেজিং সেবাসংক্রান্ত। তারা ফেসবুকের কাছে মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের জন্য অর্থ দাবি করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার করা ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ফেসবুক যে মোবাইল মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, এতে ব্ল্যাকবেরির উদ্ভাবনকে কাজে লাগানো হয়েছে। এতে নিরাপত্তা, ইউজার ইন্টারফেস ও বিভিন্ন ফিচার তৈরিতে ব্ল্যাকবেরির পণ্য কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে। ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের পাশাপাশি ফেসবুকের নিজস্ব মেসেজিং প্ল্যাটফর্মেও পেটেন্ট লঙ্ঘন করা হয়েছে।

প্রযুক্তি বিশ্বে অবশ্য পেটেন্ট লঙ্ঘনের এ ধরনের মামলা একেবারে নতুন নয়। এখন অর্থ আয় করতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা করতে দেখা যায়। এর আগে ২০১২ সালে ফেসবুকের বিরুদ্ধে পেটেন্ট ভঙ্গের দায়ে মামলা করেছিল ইয়াহু। এ ছাড়া ২০১৬ সালে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল নকিয়া। ২০১৬ সাল থেকে নিজস্ব পেটেন্টগুলো নিয়ে মামলা করা শুরু করে ব্ল্যাকবেরি। এর আগে অ্যান্ড্রয়েড ফোন নির্মাতা ব্লু ও ইন্টারনেট টেলিফোন কোম্পানি অভয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকের বিরুদ্ধে মোট সাতটি পেটেন্ট ভঙ্গের অভিযোগ করেছে ব্ল্যাকবেরি।

এ ধরনের মামলায় অবশ্য কোনো সেবা বন্ধের আদেশ দিতে অনীহা করেন আদালত। এর বদলে অর্থ লেনদেনে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ মামলায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্ল্যাকবেরির পক্ষ থেকে আসা দাবিগুলো অযৌক্তিক বলে খণ্ডানোর চেষ্টা করবে। এ ছাড়া ব্ল্যাকবেরির বিরুদ্ধে পাল্টা মামলাও করতে পারে। এমনকি ব্ল্যাকবেরির সঙ্গে পেটেন্ট নিয়ে সমঝোতার পথেও হাঁটতে পারে।

ব্ল্যাকবেরির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্ল্যাকবেরির সহযোগী হতে পারে। আমরা দরজা খোলা রেখেছি। তবে ফেসবুক যে আমাদের পেটেন্ট ভেঙেছে, তার জোর দাবি করতে পারি। কয়েক বছর ধরে আলোচনার পর আমাদের আইনি পথে যেতেই হচ্ছে।’ ব্ল্যাকবেরির এ অভিযোগ অবশ্য ভালোভাবে নেয়নি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তারা ব্ল্যাকবেরির দাবি মেনে নেবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। ফেসবুকের কর্মকর্তা পল গ্রিওয়ারল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ব্ল্যাকবেরি মামলা দুঃখজনকভাবে বর্তমান মেসেজিং ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। নিজেদের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা বাদ দিয়ে অন্যের উদ্ভাবন থেকে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করছে তারা। আমরা লড়ব।’

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :মার্চ ৭, ২০১৮ ১২:১২ অপরাহ্ণ