স্বাস্থ্য ডেস্ক:
রেস্তোরাঁয় অথবা বাড়িতে খাবার শেষে এক চিমটি মৌরি চিবোতে চিবোতে অনেকেই পছন্দ করেন। আবার অনেক বাড়িতে এটা নিয়ম হিসেবে চলে আসে যে খাবার শেষে একটু মৌরি চিবতেই হবে। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন খাবার শেষে মৌরি কেনো খাওয়া হয়? আসলে বহুকাল থেকেই এ ভারতীয় উপমহাদেশে কিছু খাওয়ার পরে মৌরি চিবনোর রীতি প্রচলিত রয়েছে। প্রাচীন যুগেই ভারতীয় বৈদ্যরা আবিষ্কার করেছিলেন খাবারের পর মৌরি খাওয়ার বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে। আসুন জেনে নেই মৌরিতে কি কি উপকারি গুণ রয়েছে।
মৌরির উপকারীতা:
মৌরি মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর। মৌরিতে এমন কিছু উপাদান থাকে যা নিজস্ব সুগন্ধের জোরে মুখ থেকে খাবারের গন্ধ (তা সে সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ যা-ই হোক না কেন) দূর করতে সক্ষম।
খাদ্য দ্রুত হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মৌরী অত্যন্ত সহায়ক। মৌরি চিবালে মুখ থেকে যে লালা ক্ষরিত হয় তা হজমে সাহায্য করে। পাশাপাশি মৌরিতে যে ফাইবার থাকে তা যেমন খাদ্যকে পাচন তন্ত্র বেয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে তেমনই তা কোষ্ঠকাঠিন্যর ওষুধ হিসেবেও কার্যকর। আসলে মৌরির এই গুণের কথা জেনেই, খাওয়ার শেষে মৌরি মুখে দেওয়ার রীতি চালু হয়েছিল।
মৌরির এই কার্যকারিতা আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানেও স্বীকৃত। যে কারণে এখনো ইসবগুল বা পেট পরিষ্কার রাখার ওষুধ তৈরিতে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মৌরি। হোটেল রেস্তোরাঁয় অবশ্য খাওয়ার শেষে মৌরি পরিবেশন করা হয় নিছক রীতি মেনে। কিন্তু এই রীতি অনুসরণের মাধ্যমেই রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ যে আমাদের সুস্থতার দিকে পরোক্ষে নজর রাখছেন এটা জেনে নিশ্চই আপনার ভালো লাগছে।
মৌরির আরো কিছু উপকারিতা:
মৌরিতে থাকা খাদ্যআঁশ কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
মৌরি পাতার নির্যাস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
নিয়মিত মৌরি খেলে স্ট্রোক এবং হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
খাওয়ার পর নিয়মিত এক চা চামচ মৌরি খেলে হজম শক্তি এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেও এটি কার্যকর।
শরীরের ওজন কমাতে এবং শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। মৌরির তেল মালিশ করলে হাঁড়ের গিরার ব্যথা কমে।
মৌরিতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভনয়েড যা ক্যানসার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। তাই নিয়মিত খাবার প্রস্তুতে মৌরি ব্যবহার করতে পারেন।
রাতে ঘুমানোর আগে আধা চা চামচ মৌরি গুড়া কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যাবে।
মুখের ভেতরের ত্বকে জ্বালা এবং ঠাণ্ডা সারাতে সাহায্য করে।
মৌরির পাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করে এর ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সঙ্গে নিলে অ্যাজমা এবং ব্রঙ্কাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
সামান্য ঘি বা মাখন দিয়ে মৌরি ভেজে বোতলে ভরে রাখুন। যখন ধূমপানের ইচ্ছা জাগবে আধা চা চামচ চিবান, নেশা কমে যাবে।
সমপরিমাণ ভাজা মৌরি এবং চিনি গুঁড়া দুই চামচ ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার দুই ঘণ্টা পর পর খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়। পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং পেট কামড়ের জন্য এটি উপকারী।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি