২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:৪১

জঙ্গি তৎপরতার অবসান হোক

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় হওয়ায় দেশে একের পর এক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মিলছে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ আস্তানাটি পাওয়া গেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়। দুই দিন ধরে অপারেশন সান ডেভিল পরিচালিত হয় সেখানে। পাঁচ জঙ্গি আত্মঘাতী হয়। এর আগে তারা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করে। দ্বিতীয় দিন আস্তানা থেকে ১১টি বোমা ও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এভাবে একের পর এক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মিলতে থাকায় ধারণা করা যায়, সারা দেশে এমন আস্তানা এখনো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সেসব আস্তানা খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, জঙ্গি-সন্ত্রাস আজ এক বৈশ্বিক সমস্যা। কাজেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কর্মকা- সহসাই নির্মূল হয়ে যাবে এমনটা ভাবারও কোনো কারণ নেই। সময়-সুযোগ পেলে আবারও তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে অনেক কিছুই বিবেচনায় রাখতে হবে এবং জঙ্গিবাদ নির্মূলে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, এর পেছনে দেশি ও বিদেশি উভয় ধরনের মদদ রয়েছে।
জঙ্গি সমস্যা বর্তমানে এক মারাত্মক রূপ পরিগ্রহ করেছে। বিশেষ করে এ আত্মঘাতী কাজে মহিলাদের সংশ্লিষ্টতা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। সরকার জঙ্গি দমনে সফলতার কথা বললেও সমাজবিধ্বংসী এ তৎপরতা বন্ধের কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। বরং কিছুদিন পর পর নতুন নতুন ঘাটি আবিষ্কার ও জঙ্গি নিহত,অহত বা আটকের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, জঙ্গীরা তাদের অপতৎপরতা চালানোর সুবিধার্থে ইসলাম ধর্মের নাম ব্যবহার করছে। অথচ জঙ্গি তৎপরতাকে ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। এক্ষেত্রে একটি বিভ্রান্ত গোষ্ঠী তাদের অপকর্মকে জায়েজ করতে ইসলামকে লেবেল হিসেবে ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে এরা দেশের যুবক ও কিশোরদের পথভ্রষ্ট করার চেষ্টায় রত।
জঙ্গি তৎপরতার নির্মূল প্রতিটি নাগরিকের প্রাণের দাবি। সরকারও জঙ্গি নির্মূলে সচেষ্ট- একথা প্রায়ই বলা হয়ে থাকে। কিন্তু জঙ্গি নির্মূলে তেমন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা । এমনকি এ বিষয়ে কার্যকর কোনো জাতীয় ঐক্যও গড়ে ওঠেনি; যদিও তা ছিল দেশবাসীর একান্ত চাওয়া। সরকারের অনাগ্রহ এবং দোষারোপের রাজনীতি যে এর প্রধান কারণ সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক, এটা প্রতিটি নাগরিকের প্রত্যাশা। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হলে যে স্থিতিশীলতা দরকার তা নিশ্চিত করতে হলে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা জরুরি। এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও ধর্মের মূল চেতনাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের যুব সমাজকে এ ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হতে প্ররোচিত করতে না পারে।

প্রকাশ :মে ১৪, ২০১৭ ২:৩৩ অপরাহ্ণ