নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরার বিরল রোগে আক্রান্ত সেই মুক্তামনিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ সকালে তাকে বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর পরপরই বার্ণ ইউনিটের সমন্বয়কারী ডাঃ সামন্ত লাল সেন তার চিকিৎসার সকল দায়ভার গ্রহণ করেন। তিনি শিশুটির রোগের এই অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের খুবই কষ্ট লাগে যখন দেখি এসকল রোগীদের অবহেলা করা হয়। আজ সকালে মেয়েটিকে আমাদের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। যদি আরো আগে তাকে নিয়ে আসা হতো তাহলে আরো ভালো হতো। আমারা তাকে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। শিশুটিকে পর্যবেক্ষণ করে তার প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা দেয়া হবে। এটি কোন বিরল নয় দাবি করে ডাঃ সামন্ত লাল সেন জানান, আমরা ৮ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছি। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি ক্যান্সার। তার একাধিক অপারেশন করা লাগতে পারে। সাতক্ষীরার ১২ বছরের শিশু মুক্তামনি। সে সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে। ইব্রাহীম হোসেন দাম্পত্য জীবনে দুই যমজ কন্যা ও এক পুত্রসন্তানের জনক। তার দুই যমজ সন্তানের মধ্যে হীরামনি বড় ও মুক্তামনি ছোট। আর ছোট ছেলে আল-আমিনের বয়স এক বছর তিন মাস। মুক্তামনির বাবা ইব্রাহীম হোসেন জানান, জন্মের প্রথম দেড় বছর যাবত ভালোই ছিল হীরামনি ও মুক্তামনি। কিছুদিন পর মুক্তামনির ডানহাতে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে তা বাড়তে থাকে। সাথে চলে স্থানীয় চিকিৎসাও। দেখলে মনে হবে গাছের বাকলের (ছালের) মতো ছেয়ে গেছে পুরো হাতটি। আক্রান্ত ডান হাত তার দেহের সব অঙ্গের চেয়েও ভারী হয়ে উঠেছে। ভেতরে পোকা জন্মেছে। বিকট যন্ত্রণায় মুক্তামনি সব সময় অস্থির। ডাক্তার বলছেন এ ব্যাধি তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। ইব্রাহীম হোসেন জানান, মুক্তার সারাদেহে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তার শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে। শুধু হাতের ভার বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দেখানো হয়েছে মুক্তা মনিকে। কেউ কোনো সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেননি। রোগের মাত্রা শুধু বেড়েই চলেছে। হতাশ বাবা ইব্রাহীম গত ছয় মাস যাবত চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় মুক্তাকে বাড়িতে রেখে কেবল ড্রেসিং করছেন।
দৈনিকদেশজনতা/ই সি