২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:১৭

আবেদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আর্মি স্টেডিয়ামে জনতার ঢল

 দেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সর্বস্তরের জনতা। রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়েছে এই শ্রদ্ধা জানানো। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তার মরদেহ আর্মি স্টেডিয়ামেই রাখা হবে।

প্রথমে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান মেজর আশিকুর রহমান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা জানান উপ-সামরিক সচিব কর্নেল সাইফুল্লাহ পিএসসি। এছাড়া স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা শ্রদ্ধা জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলটির নেতারা শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।

এর আগে সকাল ৯টা থেকেই আর্মি স্টেডিয়ামে আসতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ, বিশিষ্টজন ও তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। ইতিমধ্যে আর্মি স্টেডিয়ামে জনতার ঢল নেমেছে।

আর্মি স্টেডিয়ামে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্রাক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আলাদা প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্টেডিয়ামেই মরহুমের জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজা শেষে দুপুর ১টায় বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। তিনি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল তদানীন্তন সিলেটের হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লন্ডনে অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে পড়ালেখা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চাকরি ছেড়ে লন্ডনে চলে যান। সেখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ এবং ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামে দুটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর ১৯৭২ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ভারত-প্রত্যাগত শরণার্থীদের জরুরি ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে আত্মনিয়োগ করেন। এ লক্ষ্যে তিনি ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত শাল্লা এলাকায় ফিরে আসা শরণার্থীদের নিয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেন।

বর্তমানে এশিয়া ও আফ্রিকার ১১টি দেশে এর কার্যক্রম বিস্তৃত। ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত টানা চার বছর জেনেভাভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা ‘এনজিও অ্যাডভাইজার’ কর্তৃক ব্র্যাক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এনজিও হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ অসংখ্য পুরস্কার ও স্বীকৃতিতে ভূষিত হয়েছেন।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ ২০১০ সালে ব্রিটেনের রানী প্রদত্ত নাইটহুড মর্যাদা লাভ করেন। ২০১০ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশসমূহের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত পরামর্শদাতা দলের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে ফরচুন ম্যাগাজিন কর্তৃক স্যার ফজলে বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালী ৫০ জন ব্যক্তিত্বের অন্যতম হিসেবে উল্লিখিত হন। তিনি এ বছর নেদারল্যান্ডের রাজা কর্তৃক নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত হন

প্রকাশ :ডিসেম্বর ২২, ২০১৯ ১২:১৫ অপরাহ্ণ