১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:৪৯

‘প্রত্যেককে দুই প্যাকেট খাবার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে’

বিদেশ ডেস্ক : বিজেপির বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং হুঁশিয়ার করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা সত্ত্বেও আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি) করা হবে। এনআরসিতে যারা অবৈধ হবে চিহ্নিত হবেন, তাদেরকে হাতে দুই প্যাকেট করে খাবার ধরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি। শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই বিজেপি নেতা।

৩১ আগস্ট (শনিবার) স্থানীয় সময় সকাল দশটায় অনলাইন ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে প্রকাশিত হয় আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি)। এ থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। বাদ পড়া ব্যক্তিদের ভারতের পক্ষ থেকে অবৈধ বাংলাদেশি দাবি করা হলেও ঢাকা বলছে, ভারতে বাংলাদেশের কোনও অবৈধ নাগরিক নেই। আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। হুমকির প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

এনআরসি ইস্যুতে মমতার দক্ষেপের সমালোচনা করতে গিয়ে বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশিদের স্থান করে দিতে মমতা এনআরসি’র বিরোধিতা করছেন। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিজেপির এই নেতা হুঁশিয়ার করেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি প্রয়োগ করা হবে তা নিশ্চিত। চূড়ান্ত তালিকার পর পশ্চিমবঙ্গে যারা ভারতের নাগরিক হিসাবে যোগ্যতা অর্জন করবেন না তাদের সম্মানজনকভাবে ভারত ছাড়তে হবে।’তিনি যোগ করেন, ‘মমতা শত বাঁধা দিলেও পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি কার্যকর করা হবে এবং সব বাংলাদেশির হাতে দুটি খাবাবের প্যাকেট ধরিয়ে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’

এ সময় হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ থেকে উদাহরণ টেনে আনেন সুরেন্দ্র সিং। তিনি বলেন, ‘লঙ্কার মানুষ হনুমানজিকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। তবুও তিনি সেখানে প্রবেশ করেছিলেন এবং লঙ্কা জয় করেছিলেন। একইভাবে যোগী আদিত্যনাথ এবং অমিত শাহও পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছেন এবং অনেকগুলো আসন জয় করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই লঙ্কার রাবণ। সেখানে রাম (বিজেপি সরকার) পা রেখেছেন। শিগগিরই পুরো পশ্চিমবঙ্গ জয় করবে বিজেপি।’

আগস্টের শেষে আসামের তালিকা প্রকাশের পর ভারতের ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার সমন্বয়কারী ও আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের বন্ধু এবং তারা আমাদের সহায়তা করে আসছে। আমরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে উপস্থাপন করলে তারা বরাবরই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই সংখ্যাটি বেশি বড় না, তবে এখন আমরা তাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’

হেমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনকে সে সময় বলেন, ‘এনআরসির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি আবারও বলছি, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি জানি না এই বিষয়ে কে কী বলেছে। ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানালে, আমরা জবাব দেব। সবমিলে আমি বলতে পারি, ১৯৭১ সালের পর কেউ বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়নি। হতে পারে ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে তারা (মূলত বাংলাভাষীরা) আসামে স্থায়ী হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নয়।’

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯ ১:৫১ অপরাহ্ণ