১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:১৭

রোহিঙ্গারা ‘বিদেশি’, অস্ত্র ধরে কার্ড দিচ্ছে মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশটিতে থাকা রোহিঙ্গা মুসলিমদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ‘বিদেশি’ লেখা পরিচয়পত্র নিতে বাধ্য করছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হওয়ার এখনো যেটুকু সম্ভাবনা রয়েছে এই পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তাও শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করেছে ফোর্টিফাই মানবাধিকার সংস্থা। এই সংস্থার বরাত দিয়ে এই খবর দিয়েছে রয়টার্স।মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অধিকারের বিষয়ে প্রচারণা করা ফোর্টিফাই অধিকার নামের একটি সংস্থা বলছে, ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) নামে এই পরিচয়পত্র জোরপূর্বক গ্রহণ করানোর মিয়ানমারের এই চেষ্টা রোহিঙ্গাদের প্রতি দেশটির মনোভাব বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়াবে।

ফোর্টিফাই গ্রুপের প্রধান নির্বাহি অফিসার ম্যাথু স্মিথ বলেন, মিয়ানমার সরকার প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগণকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। এটি রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার হরণ করবে।

গ্রুপটি জানিয়েছে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড নিতে বাধ্য করছে, যার মাধ্যমে কার্যকরভাবে তারা ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এনভিসি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছিল এবং রোহিঙ্গাদের চলাফেরার স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল।

মিয়ানমারের বৌদ্ধ সরকার রোহিঙ্গাদের দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। দেশটির দাবি, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গিয়ে ঘাটি গেড়েছে। তবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছেন তা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্ব গণমাধ্যম।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধদের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এরপরই রাখাইন বিশ্বের নজরে আসে।

রোহিঙ্গাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ‘বিদেশি’ লেখা কার্ড দেয়ার বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ্য তাই।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নি রোহিঙ্গাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং নির্যাতন করে কার্ড দেওয়ার কথা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘এটি সত্য নয় এবং এবিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই’।

এই ইস্যুটি বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আরও জটিল করে তুলতে পারে। কারণ, রোহিঙ্গারা বলতে পারে যে তারা নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা না পেলে মিয়ানমারে ফিরবে না।

গত বছর পরিচালিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন বলছে, ২০১৭ সারে রাখাইনে যে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছিল তাতে ‘গণহত্যা অভিপ্রায়’ অভিপ্রায় ছিল। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ আরও পাঁচ জেনারেলকে ‘নৃসংশতম অপরাধে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায়’ আনার সুপারিশও করেছিল তারা।

মিয়ানমার বরাবর অভিযোগগুলি অস্বীকার করলেও গত মাসে মিন অং হ্লাইং বলেছিলেন, এসব ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর একদল সদস্য জড়িত থাকতে পারে।

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯ ৪:২১ অপরাহ্ণ