১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:২৪

গুডিসনে পথ হারালো লিভারপুল

খেলা ডেস্ক

পা হড়কালেই বিপদ। প্রিমিয়ার লিগে শিরোপার দৌড়ে সমীকরণটাই হয়ে গেছে এমন। ম্যানচেস্টার সিটি আগেরদিন নিজেদের কাজটা সেরে রেখেছিল। লিগের বাকি সবগুলো ম্যাচ জিতলে লিভারপুলকে আটকাতে পারত না কেউই। কিন্তু লিভারপুল আর শিরোপাভাগ্য নিজেদের হাতে রাখতে পারল না। গুডিসন পার্কে গোলশূন্য ড্র করে ৯ ম্যাচ বাকি থাকতে সিটির চেয়ে এক পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছে লিভারপুল।

মার্সিসাইড ডার্বিতে গোলশূন্য ড্র যেন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিয়ে ৩৪ বার ঘটল একই ঘটনা। আর কোনো ফিক্সচারে এতোগুলো গোলশূন্য ড্রয়ের রেকর্ড নেই। গত বছর মৌসুমের প্রথম ডার্বিটাও অবশ্য সেই পথে হাঁটছিল, কিন্তু শেষ মুহুর্ত ডিভক অরিগি বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন লিভারপুলকে। এবার রবার্তো ফিরমিনোর বদলে ফিরতি ম্যাচে সালাহ-মানেদের সঙ্গে সেই অরিগিই নেমেছিলেন। তিনজনের একজনও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি, পরে নামা রবার্তো ফিরমিনোও হতাশদের দলভারী করেছেন কেবল পরে নেমে। ইয়ুর্গেন ক্লপ তাই মাঠ ছেড়েছেন মলিন মুখে। মার্কো সিলভাকে ‘বিশ্বকাপ জয়ের’ মতো উদযাপন দেখতে হয়নি এবার। তবে মনে মনে সিলভা বিশ্বজয়ের আনন্দই পাওয়ার কথা। নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের শিরোপা স্বপ্নে তো আগুন ধরিয়ে দিলেন তিনিই।

মৌসুমের শুরু থেকেই উড়তে থাকা লিভারপুলের জন্য ব্যাপারটা অস্বস্তিকরই। শেষ ৪ ম্যাচে এই নিয়ে ৩ বার গোলশূন্য ড্রয়ে ম্যাচ শেষ করেছে লিভারপুল। সবমিলিয়ে শেষ ৬ ম্যাচে ৪ ড্র। গোলের সামনে একরকম দিশেহারাই হয়ে গেছে লিভারপুল। তবে আলোচনা হতে পারে আসলে ক্লপের দল বাছাই নিয়ে। ফাবিনহো, হেন্ডেরসনে গড়া মিডফিল্ড আরও একবার হতাশ করেছে লিভারপুলকে।

লিভারপুলকে হতাশ করেছেন জর্ডান পিকফোর্ডও। অ্যানফিল্ডের ম্যাচে তার ভুলে গোল খেয়ে বসেছিল এভারটন। এবার শাপমোচন করেছেন তিনি। প্রথমার্ধে মোহামেদ সালাহর নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দিয়ে পিকফোর্ড নায়ক বনে গিয়েছিলেন গুডিসন পার্কে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকেও অবশ্য আরেকবার সালাহ গোলবঞ্চিত হয়েছে। শেষ মুহুর্তে মাইকেল কিন স্লাইড ট্যাকল করে গোল পেতে দেননি মিশরীয় ফরোয়ার্ডকে।

প্রথমার্ধে লিভারপুলের রক্ষণে কোনো ভীতিই ছড়াতে পারেনি এভারটন। হয়ত তেমনটা চায়ওনি সিলভার দল। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য খোলস ছেড়ে বেরিয়েছিল তারা। তখনই উজ্জীবিত সমর্থকেরাও আশা দেখছিলেন। কারণ একটা সময় লিভারপুলের চেয়ে আক্রমণে এভারটনকেই বেশি তীক্ষ্ণ মনে হচ্ছিল। তবে অ্যালিসনকে বিপদে পড়তে হয়েছে হাতে গোণা অল্প কয়েকবার। ডমিনিক ক্লাভার্ট লুইনের একটি হেড ঠেকিয়েছেন তিনি। পরে ক্লাভার্ট লুইন ক্রস করেছিলেন রাইট উইং থেকে, রিচার্লিসন সেটার নাগাল পেলে অবশ্য অ্যালিসন আরও ঝামেলায় পড়ে যেতে পারতেন। কিন্তু রিচার্লিসনের ফর্মে ফেরা হয়নি। কিছুক্ষণ পর সেঙ্ক তুসানও বলের সঙ্গে ঠিকমতো সংযোগ ঘটাতে পারেননি রাইট ফুটেড শট করে। তাই অ্যালিসনকেও খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। এর মধ্যে অবশ্য লিভারপুলের আক্রমণ চলেছে দ্বিতীয়ার্ধ জুড়েই। ফাবিনহো একবার বল পেয়েছিলেন ভার্জিল ভ্যান ডাইকের হেড থেকে। ডিবক্সের ভেতর বল ধরে রাখতে পারেননি, নইলে ওটাই ম্যাচ বদলে দিতে পারত। আরও একবার দরকারের সময় নিভে যাওয়ায় তাই ডিসেম্বরের ৭ তারিখের পর সমান ম্যাচে প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান হাতছাড়া হলো লিভারপুলের।

প্রকাশ :মার্চ ৪, ২০১৯ ১২:০৩ অপরাহ্ণ