১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:১৭

দেশজুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে এক ব্যাংকারের স্বপ্ন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতা অর্জনের ফলেই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের এমডির মতো শীর্ষ পদে আসীন হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। জাতির পিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা থেকে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম নিজ প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’। এ নিয়ে গত বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছিলেন তিনি। তার ধারণার আদলে এখন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বঙ্গবন্ধু কর্নার প্রতিষ্ঠায় সরকারি এ উদ্যোগে অভিভূত তিনি। তার প্রত্যাশা, এ ভাবনা ছড়িয়ে পড়বে দেশের সব প্রতিষ্ঠানে।

শামস-উল ইসলাম জানান, অগ্রণী ও আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকে বঙ্গবন্ধু কর্নার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বিষয়ে গত বছরের ১২ জুন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন। সংসদ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ব্যাংকের পক্ষে চেক হস্তান্তরের সময় বঙ্গবন্ধু কর্নার বিষয়ে কয়েকটি ছবি তার হাতে তুলে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রধানমন্ত্রী এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এরপর গত জুলাইয়ে সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশের পর তিনি জানতে পারেন জাতীয়ভাবে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

১৯৮৪ সালে অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন শামস-উল ইসলাম। ২০০৮ সালে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। পরে ডিএমডি হন। এরপর প্রথমে আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংকের এমডি হিসাবে যোগদান করেন। অগ্রণী ব্যাংকে যোগদানের ১০০ দিনের মধ্যে প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান, এমডিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফ্লোরে প্রবেশ দ্বারে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেন তিনি। এখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ১০০ কেজি ওজনের ব্রোঞ্জের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য। আরও আছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বিভিন্ন বই, বক্তৃতার সিডি, অ্যালবামসহ বিভিন্ন প্রকাশনা। এখানে স্থাপিত মনিটরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার ব্যবস্থা রয়েছে।

আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি থাকা অবস্থায়ও তিনি এ কাজ করেন। ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকীতে ব্যাংকটির দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যানের কক্ষ ও বোর্ডরুম সংলগ্ন একটি রুমে বঙ্গবন্ধু কর্নার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে রয়েছে গ্লাস ফাইবারে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন সংগ্রহ। অগ্রণী ব্যাংকে মৌলভীবাজারের আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ২০১০ সালে আঞ্চলিক কার্যালয়ে স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু কর্নার।

শামস-উল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে নানা সমালোচনা ছিল। সেসব উপেক্ষা করে তিনি এটা করেছেন। এখন জাতীয়ভাবে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও এ রকম উদ্যোগ নিচ্ছে বলে তিনি শুনেছেন। এটাই তার আত্মতৃপ্তির বিষয়।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার আগে অগ্রণী ব্যাংকের নাম ছিল হাবিব ব্যাংক। দেশ স্বাধীন না হলে বড় জোর তিনি হয়তো ওই ব্যাংকের এজিএম পর্যায়ের কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ পেতেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে এমডি পর্যায়ে আসতে পেরেছেন। অন্য সব ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে সামর্থ্য অনুযায়ী সব প্রতিষ্ঠানের উচিত বঙ্গবন্ধু চর্চাকেন্দ্র গড়ে তোলা।

শামস-উল ইসলামের ধারণার আদলে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব কর্নারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা বই ও প্রমাণ্যচিত্রগুলো স্থান পাবে। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন লেখকের প্রবন্ধ, বক্তৃতা, বিবৃতি, বাণী, নির্দেশ, সাক্ষাৎকার এবং ছবিও স্থান পাবে এখানে। কোন বইগুলো রাখা হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। নির্ধারিত বইয়ের তালিকা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর পর তা গ্রন্থাগারে সংরক্ষণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা বইয়ের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রকাশ :অক্টোবর ৮, ২০১৮ ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ