২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:৩৯

বিশ্ব বাণিজ্যে গতি কমবে: ডব্লিউটিওর পূর্বাভাস

অর্থনীতি ডেস্ক:
বিশ্ব বাণিজ্যের গতি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিওটিও)। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, মুদ্রামানে অস্থিরতাসহ উন্নত বিশ্বে সংকোচনমূলক আর্থিক নীতির কারণে বাণিজ্যের গতি কমে যেতে পারে বলে মনে করছে সংস্থাটি। গত এপ্রিলে বিশ্ব বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির যে পূর্ভাবাস দেওয়া হয়েছিল সম্প্রতি সেটি কমিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।

গত এপ্রিলের প্রতিবেদনে চলতি বছর বিশ্ববাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৪ শতাংশের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সেপ্টেম্বরের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

নতুন করে পূর্বাভাস পরিবর্তনের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বের মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির গতি ধীর হয়ে যাওয়ার জন্য বাণিজ্যের গতিও কমে আসবে। তাছাড়া বিশ্ব বাণিজ্যে কিছু অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ধীরে এগুচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সংকোচনমূলক আর্থিক নীতি, ডলারসহ বিভিন্ন মুদ্রামানে অস্থিরতা সামনের দিনগুলোতে বাণিজ্যের গতিকে শ্লথ করে দেবে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা তৈরি হতে পারে। তাছাড়া চীন-মার্কিন পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের পর নীতি-নির্ধারকরা বাণিজ্য নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে।

বাণিজ্যের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে বিশ্ব বাণিজ্যের আকার। এসময় উন্নত বিশ্বের রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে তিন শতাংশ হারে। অবশ্য এসময়ে আমদানিও বেড়েছে সমান হারে।

ভৌগোলিক দিক বিবেচনা করলে এবছর প্রথমার্ধে সব অঞ্চলেই আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। কিছু অঞ্চল তুলনামূলক ভালো করেছে। উত্তর আমেরিকার বাণিজ্যের গতি অন্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এবছর জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৮ হারে। অন্যদিকে এশিয়ার রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং ইউরোপের রপ্তানি বেড়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশ হারে। অন্যদিকে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং কমনওয়েলথভুক্ত স্বাধীন দেশগুলোর গড়ে ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে রপ্তানি বেড়েছে।

অন্যদিকে দ্রুত বাড়ছে এশিয়ার আমদানির হার। আলোচ্য সময়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে এশিয়ার আমদানির পরিমাণ। যা দক্ষিণ আমেরিকার সাড়ে ৫ ভাগ, উত্তর আমেরিকার ৪ দশমিক ৮ ভাগ, ইউরোপে ২ দশমিক ৯ ভাগ বেড়েছে।

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, জ্বালানির দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আগের বছরের আগস্টের তুলনায় এবছর আগস্টে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৩৩ ভাগ বেড়েছে। গেল জানুয়ারির পর ডলারের দর প্রায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। সবমিলিয়ে বাণিজ্যের আকার শক্তিশালী বলা হলেও প্রবৃদ্ধির গতি আগের ধারণার চেয়ে ধীর হবে। তাছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হলে সেটি বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে বাধাগ্রস্ত করে। সেইসঙ্গে বাণিজ্যের গতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এজন্য পূর্বাভাস কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮ ৫:০০ অপরাহ্ণ