দিনাজপুর প্রতিনিধি:
প্রায় তিন মাস বন্ধের পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে খনির ১৩১৪ নম্বর ফেস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়। তবে পুরোদমে উত্তোলন হবে আগামী সোমবার থেকে।
আজ শনিবার বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফজলুর রহমান জানান, ‘খনির ১৩১৪ নম্বর ফেসের টানেল নির্মাণের কাজ শেষ করার পর রাত সাড়ে ৯টা থেকে উত্তোলন শুরু হয়েছে। সকাল ৬টা পর্যন্ত এই ফেস থেকে ৫২৯ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হয়েছে। আগামী ২/১ দিনের মধ্যেই ২ হাজার থেকে ২২শ’ টন কয়লা উত্তোলন করা হবে।’
এর আগে খনির ভূগর্ভের ১২১০ নম্বর কোল ফেসে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় গত ১৬ জুন সেটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। একই সময় ৫২৫ মেগাওয়াটের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার মজুদও শেষ হয়ে যায়। এতে ২২ জুলাই থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ উৎপাদন।
এদিকে বন্ধ হলেও খনির কাগজপত্রে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন মজুদ থাকার কথা। বিপুল পরিমাণ কয়লা গায়েব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। এ ঘটনায় সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ চার কর্মকর্তাকে খনি থেকে প্রত্যাহারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলাটি দুদক তদন্তাধীন।
অস্বাভাবিক এ পরিস্থিতির মধ্যেই খনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও শ্রমিকদের নিরলস পরিশ্রমে আজ ১৩১৪ নম্বরের কোল ফেস থেকে পরীক্ষামূলক কয়লা উত্তোলন গতকাল শুক্রবার রাতে শুরু হয়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সোমবার থেকে পুরোদমে উত্তোলন শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও খনিশ্রমিকরা।
খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং) সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটই দ্রুত চালুর বিষয়টি মাথায় রেখে ১৩১৪ কোল ফেসের সার্বিক কাজ পরিচালনা হচ্ছে। গত ২৬ আগস্ট খনির প্রশাসন ভবনে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও খনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। সেখানেই ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে বিষয়টি।