দিনাজপুর প্রতিনিধি:
টানা ২৯ দিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টা ২০ মিনিট থেকে এই কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু হয়েছে। ঈদে বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় কয়লার মজুদ সাপেক্ষে ছয় থেকে সাত দিন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে খনির ভেতর টানেল নির্মাণ করতে প্রতিদিন যে সামান্য কয়লা উত্তোলন হচ্ছে, তা মজুদ করে এদিন দুপুর থেকে চালু করা হয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এ প্রসঙ্গে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান জানান, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের দ্বিতীয় ইউনিটটি সোমবার দুপুরে চালু করা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হলেও ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বাড়বে। এতে লো-ভোল্টেজের সমস্যাসহ লোডশেডিং থেকে মুক্ত রাখা যাবে উত্তরাঞ্চলের আটটি জেলাকে।
চালু হওয়া ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিটটি চালু রাখতে দৈনিক প্রয়োজন এক হাজার দুইশ’ টন কয়লা। বর্তমানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা মজুদ আছে প্রায় ছয় হাজার টন। সর্বমোট ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন পাঁচ হাজার দুইশ’ টন।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেডের রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার জানান, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু তারা জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ পাচ্ছেন ৫০০-৫৫০ মেগাওয়াট।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে গত জুন মাসের মাঝামাঝি ২০১০ নম্বর ফেজে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় ১৯ জুন থেকে কয়লা খনিতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। নতুনভাবে ১৩১৪ নম্বর ফেজে কয়লা তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে এই উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান। এ লক্ষ্যে বর্তমানে খনির ভেতর টানেল তৈরি করা হচ্ছে। এ সময় যে কয়লা পাওয়া যাচ্ছে তা জমিয়ে রেখে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে গত ২২ জুলাই কয়লা শেষ হয়ে যাওয়ায় এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত ২৪ জুলাই খনির ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এটি বর্তমানে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।