২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৪১

মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি: এবার ‘গায়েব’ ৫৬ কোটি টাকার পাথর

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

দেশের উৎপাদনশীল বড়পুকুরিয়া কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনার রেশ না কাটতেই মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে নতুন করে যোগ হয়েছে আরেক কেলেঙ্কারি। এবার সেখানে ৫৬ কোটি টাকার পাথরের হদিস মিলছে না।

তবে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে পরিমাপের ত্রুটি, সিস্টেম লস বা পদ্ধতিগত লোকসান ও মাটির নিচে দেবে যেতে পারে বলে দাবি করছেন। বড়পুকুরিয়ায় কয়লা কেলেঙ্কারি ঘটনাটি দেশজুড়ে তোলপাড় হওয়ার পরপরই মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে তড়িঘড়ি করে গত ২৯ জুলাই এমজিএমসিএলের অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হয়। একই দিন বিষয়টি তদন্তের জন্য পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জাবেদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন পেট্রোবাংলার ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন, আনোয়ার হোসেন খান ও মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির উপমহাব্যবস্থাপক রাজে উন নবী।

জানা যায়, মধ্যপাড়া পাথর খনির উন্নয়নকালীন সময়সহ ২০০৭ সালের ২৫ মে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত পাথর তোলা হয়েছে ৪২ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন। বোর্ড সভায় উত্থাপিত প্রতিবেদনে ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত পদ্ধতিগত লোকসান দেখানো হয়েছে দুই লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন পাথর। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক লাখ ছয় হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন পাথর খনি ইয়ার্ডে মাটির নিচে দেবে গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। খনি কর্তৃপক্ষ হদিস না পাওয়া এই তিন লাখ ৫৯ হাজার ৮১৬ মেট্রিক টন পাথরের দাম ৫৫ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৮ টাকা অবলোপন করার জন্য এমজিএমসিএল বোর্ডকে অনুরোধ জানায়।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা জানান, মধ্যপাড়া খনির পাথরের পরিমাপগত ত্রুটি, সিস্টেম লস বা পদ্ধতিগত ক্ষতি ও মাটির নিচে দেবে যাওয়ার বিষয়ে বোর্ড এবং পেট্রোবাংলাকে নিয়মিতভাবে জানানো হয়েছে। তার পরও বিষয়টি এত দিনেও সমন্বয় বা অবলোপন করা হয়নি, এটি দুঃখজনক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক কর্মকর্তা জানান, ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত খনির বাস্তবায়নকারী উত্তর কোরিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নামনাম কর্তৃক পাথর উৎপাদনকালীন পরিমাপগত ত্রুটি ও সিস্টেম লস দেখানো হয় দুই লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন। এর পর থেকে মাটির নিচে দেবে গেছে বা মাটি পাথর খেয়ে ফলেছে বলে দাবি করা হয়। বিষয়টি রহস্যজনক বলে ওই কর্মকর্তা মনে করেন। খনির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জাবেদ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি বোর্ড সভায় উত্থাপিত হওয়ার পর আমি জানতে পেরেছি। কাগজপত্র না দেখে বিস্তারিত বলা যাবে না।’

প্রকাশ :আগস্ট ৭, ২০১৮ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ