নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বাহানা। মামলার তারিখ পড়লেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।’- শেখ হাসিনার এ বক্তব্য অমানবিক ও চরম প্রতিহিংসার বহির্প্রকাশ। তিনি খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গতকালও কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে রিপোর্ট করেছে- খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তাই তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি। সরকারি-বেসরকারি এবং বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বলছেন- তিনি অসুস্থ। তা হলে খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারেন?
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যখন কারাগারে ছিলেন, তখন প্রতিদিন শুনতাম তিনি কানে শোনেন না, চোখেও দেখেন না- আরও কত কী। দিব্যি বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে নিজের পছন্দের চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
সুতরাং খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য বিবেকবর্জিত ও বিনাচিকিৎসায় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে দিতে চান বলে জানান তিনি।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যেহেতু বর্তমানে খালেদা জিয়ার মামলাগুলো চলমান। সুতরাং এ মামলাগুলোকে প্রভাবিত করতেই খালেদা জিয়াকে নিয়ে শেখ হাসিনা বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য দিচ্ছেন। আমি দলের পক্ষ থেকে আবারও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, মিথ্যা মামলা, দীর্ঘদিন কারাগারে আটক, রিমান্ডে নির্যাতন তিনি (আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান) সহ্য করেছেন। কিন্তু গত রোববার তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ সামগ্রিক সরকরি সন্ত্রাসের প্যারাডাইম শিফট। এই রক্তাক্ত ঘটনায় প্রতিবাদী কলাম লেখক, বুদ্ধিজীবীদের শুধু মামলা ও কারাভোগই নয়, তাদের জীবনকেও সংকটাপন্ন করার বার্তা দেয়া হল।
তিনি বলেন, সারা দেশে বন্দুকযুদ্ধের নামে চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। এরই অংশ হিসেবে সোনারগাঁওয়ে ছাত্রদল নেতা আলমগীর হোসেন বাদশা র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আমি এই নৃশংস ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রুহুল কবির বলেন, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর আইনজীবী সমর্থকগণ কর্পোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও শোভাযাত্রা করছে। এ মিছিলে পাবলিক প্রসিকিউটর, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এবং স্পেশাল পিপিগণ অংশগ্রহণ করেছেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার পরও তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আমি দলের পক্ষ থেকে নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, কৃষক দল নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।