নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে কতটুকু গুরুতর অসুস্থ সে খবর জানতেও দিচ্ছে না কারা কর্তৃপক্ষ। গত পরশু দিন পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে কারা কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। অসুস্থতার খবর জানতে পারার পরও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কারা ভবনের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষ তার চিকিত্সা নিয়ে শুধু উদাসীনই নয়, সরকারের নির্দেশে কোনো ভয়ঙ্কর মাস্টারপ্ল্যানের দিকে এগুচ্ছে কী না তা নিয়ে জনমনে এক বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, শুধু তাই নয় খালেদা জিয়ার সুচিকিত্সার বিষয়টি শুধু এড়িয়েই যাচ্ছে না বরং জাতীয় সংসদে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রেখেছেন। বলেছেন, ‘‘বেগম জিয়ার অসুস্থতা না কি বাহানা! ৭৩ বছর বয়স্ক একজন অসুস্থ নারীর প্রতি নারী প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের ব্যঙ্গোক্তি সত্যি দুঃখজনক। আমি দলের পক্ষ থেকে সরকারের এই নিষ্ঠুর আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করে সুচিকিত্সার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
রিজভী চিকিত্সকদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘বেগম জিয়া ট্রানজিয়েন্ট স্কিমিং অ্যাটাকে (টিআইএ) ভুগছেন। প্রায়ই তার জ্বর হচ্ছে। আর পায়ের ব্যথায় হাঁটতে পর্যন্ত পারছেন না।
তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খুলনা ও গাজীপুরের মতো তিন সিটিতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। মূলত একথার মাধ্যমে ভোট কারচুপির সুষ্পষ্ট আভাস দিলেন তিনি। তিন সিটিতেই নৌকা মার্কার পক্ষে নির্বাচনী অনাচার আর ক্ষমতাসীনদের অবৈধ দাপট চলছে। বাস্তবতা হলো তিন সিটিতেই সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিদ্যমান নেই, নিরাপদে ভোট দিতে পারবে কিনা সেটি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে এখনও শঙ্কা কাটেনি।
এসব নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে বারবার অভিযোগ করা হলেও তা আমলে নেয়া হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো মানে অরণ্যে রোদন বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। রিজভী বলেন, ‘শাসকের বিরোধীতা করার অর্থ রাষ্ট্রের বিরোধীতা করা নয়। আর এই বিরোধীতার জন্য নিরপরাধ ব্যক্তিদেরকে পুলিশ ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে রক্তাক্ত করা ঘোরতর অন্যায় ও পাপ। রবিবার শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের তাণ্ডব পুলিশের উপস্থিতিতেই ঘটেছে। তুমুল ছাত্র আন্দোলনের মুখে কোটা আন্দোলনের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে সেদিন সরকার যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন সেটিতে ব্যর্থ হয়ে এখন তিনি আন্দোলনকারীদের দমাতে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে।
কর্মসূচি:
রিজভী জানান, খালেদা জিয়ার সুচিকিত্সা ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে আগামী শুক্রবার বেলা তিনটায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় অথবা প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি সমাবেশ করবে। এছাড়া একই দাবিতে ওইদিন দেশব্যাপী সকল জেলা, মহানগর ও উপজেলা সদরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি। বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সমাবেশ সফল করার জন্য অনুরোধ জানান রিজভী।