১৯শে মে, ২০২৪ ইং | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:৩০

তারাবীহ: ফাযায়েল ও মাসায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তারাবীহর ফযীলত

রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের মাস। এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করা বড়ই সহজ। অধিকন্তু, এ মাসে শয়তান থাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ। তাই ইবাদত-বন্দেগিতে একাগ্রতা ও খুশু-খুযু সৃষ্টি করা সহজ। বিশেষত উম্মতে মুহাম্মাদীর ওপর আল্লাহ তাআলার বড় নেয়ামত যে, তিনি রমজানের দিনে রোজাকে ফরজ করেছেন আর তাঁর রাসুলের (সা.) জবানে ‘কিয়ামে রমজান’ নামে তারাবীর মতো বরকতময় ইবাদত দান করেছেন। যে ইবাদতের মাধ্যমে এ উম্মত রমজান মাসে বরকত ও ফযীলতের পাশাপাশি আল্লাত তাআলার নৈকট্য ও জান্নাত হাসিল করতে পারবেন। তারাবীর ফযীলত সম্পর্কিত কিছু হাদীস নিচে উল্লেখ করা হলো:

“যে ব্যক্তি রমজান মাসে পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় ‘কিয়ামে রমজান’ (অর্থাত তারাবীর নামাজ) আদায় করবে আল্লাহ তাআলা তার পেছনের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (সহীহ বুখারী ১/২৬৯, হাদীস-২০০৯)।

অন্য হাদীসে তারাবীর ফযীলত এভাবে বর্ণিত হয়েছে-

‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর রমজানের সিয়াম (রোজা) ফরজ করেছেন এবং আমি (আল্লাহ তাআলার হুকুমে) কিয়ামে রমজান (অর্থাত তারাবীর নামাজ) এর বিধান জারি করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে এবং রাতে নামাজ (তারাবীহ) পড়বে, সে যাবতীয় গুনাহ থেকে নবজাত শিশুর মতো পবিত্র হয়ে যাবে।’ (সুনানে নাসায় ১/২৩৯, হাদীস ২২১০, সুনানে ইবনে মাজাহ ৯৪, হাদীস ১৩২৮)।

অন্য এক হাদীসে আছে, জনৈক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল আমাকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, যাকাত আদায় করি, রমজান মাসের রোজা রাখি এবং রমজানের কিয়াম (তারাবীহ) আদায় করি, তাহলে আমি কাদের অন্তর্ভূক্ত হবো? নবী (সা.) ইরশাদ করলেন, তুমি সিদ্দীক ও শহীদদের অন্তর্ভূক্ত হবে।’ (সহীহ ইবনে হিব্বান ৮/২২৩-২২৪, হাদীস ৩৪৩৮)।

এ মাগফেরাত ও রহমতের আশায় এবং ফযীলত ও বরকতের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তাআলার মুমিন বান্দাগণ রমজানের রাত নামাজ ও অন্যান্য নফল ইবাদতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাহাজ্জুদ যা পুরো বছরের রাতের ইবাদত ছিল এ মাসে এর প্রতি আরো বেশি যত্নবান হোন। যেন কিয়ামূল লাইলের পূর্ণ ফযীলত পাওয়া যায়।

তারাবীহর মাসায়েল

-রমজান মাসে তারাবীর নামাজ নারী-পুরুষ সবার জন্য সুন্নতে মুআক্কাদা। (আল মুহীতুল বুরহানী ২/২৪৯।

-তারাবীর নামাজের সময় ইশার নামাজের পর থেকে শুরু হয়। সুতরাং ইশার আগে আদায়কৃত কোনো নফল নামাজ তারাবীহ বলে গণ্য হবে না। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৪)।

-যে ব্যক্তি ইশার নামাজের জামাত পেল না সে আগে ইশার নামাজ পড়বে, এরপর তারাবীহ নামাজের জামাতে শরিক হবে। ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১৫।

-রমজান মাসে তারাবীতে অন্তত এক খতম কুরআন মাজীদ পড়া সুন্নত।

-নাবালেগকে তারাবীতেও ইমাম বানানো জায়েজ নয়। ফাতাওয়াতে হিন্দিয়া ১/১১৭।

-মজানে বিতর নামাজ জামাতের সাথে পড়া মুস্তাহাব। রদ্দুল মুহতার ২/৪৮।

-তারাবীর নামাজ দাঁড়িয়ে পড়াই উত্তম। দাঁড়িয়ে পড়ার শক্তি-সামর্থ্য না থাকলে বসে না পড়াই উচিত। আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮।

দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ

 

প্রকাশ :জুন ৩, ২০১৭ ৪:৩৪ অপরাহ্ণ