মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, দুপুরের পর থেকে খুলনা পুলিশ কমিশনার নৌকায় এক চেটিয়া সিল মারার নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে বিকেল সাড়ে ৪ টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা নানা সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, কেসিসি নির্বাচনে দুপুর আড়াইটার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায় নৌকা প্রার্থীর পক্ষে এক চেটিয়া সিল মারার নির্দেশ দিয়েছেন সয়ং খুলনা পুলিশ কমিশনার।
রিজভী বলেন, ভোট এরকমই হবে, এটা নৌকা মার্কার প্রার্থী নিশ্চিত ছিলেন। সে কারণেই নির্বাচনের দুই দিন আগে, ভোট বিজয়ী নেতা হিসেবে জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাঁটিয়েছেন, বললেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো দিনই দুষণমুক্ত নির্বাচন হবে না। সরকার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন ও আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডাররা একই নৌকার যাত্রী হওয়ার কারণে ভোট ডাকাতির নির্বাচনকেই আদর্শ নির্বাচন হিসেবে তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে।
রিজভী বলেন, সরকার মূলত দেশবাসীর রক্ত পান করতে করতে সারা দেশকে ভাগাড়ে পরিণত করেছে। আজকের ভোট সন্ত্রাসের ঘটনায় খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোটাররা ব্যথিত, বঞ্চিত, অপমানিত।
বিএনপির নানা সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী খুলনা সিটি করপোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ডের শেখপাড়া আইয়ুব আলী ভোট কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের সকল এজেন্ট বের করে দিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মেরেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ২৪ নং ওয়ার্ডের দারুস সালাম কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্ট বের করে দিয়েছে তারা। বিএনপির কোনো ভোটার সেখানে ঢুকতে পারেনি।
২৮ নং ওয়ার্ডের ইউসেফ স্কুল ভোট কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন ধানের শীষের এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়, ২২ নং ওয়ার্ডের প্রাইমারি স্কুল ভোট কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের সকল এজেন্ট জোরপূর্বক বের করে দিয়ে নৌকায় সিল মারে আওয়ামী সমর্থকরা, অভিযোগ রিজভী আহমেদের।
তিনি বলেন, ৩১ নং ওয়ার্ডের ১৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি ভোট কেন্দ্রই দখল করে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। ৪ নং ওয়ার্ডের দেয়ানা দক্ষিণপাড়া কেন্দ্রে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের লোকেরা দখল করে নৌকা মার্কায় জাল ভোট দিয়েছে। ১১, ১৩, ১৫, ২৪,২৫, ৩১ নং ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রে একই ঘটনা ঘটেছে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ২৯৪টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সবকটিতেই ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে নির্বাচনের ফলাফলকে নিজেদের পক্ষে নেয়ার জন্য সব অপচেষ্টা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দখল করে নেয়া ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৯৫টি। শেষ পর্যন্ত এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫০টির অধিক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, আসাদুল করিম শাহীন, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেনসহ আরো অনেকে।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর