২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং | ৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:৫৫

বাসে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানি বন্ধে শিক্ষার্থীদের নয় দফা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গণপরিবহনে নারী ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানি বন্ধের জন্য সরকারের কাছে নয় দফা দাবি জানিয়েছেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির সঙ্গে জড়িত তিন পরিবহন শ্রমিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানিয়েছে তারা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পারভেজ হোসেন বলেন, ‘এই তিন অপরাধীকে যদি আদালত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আরও কঠোর থেকে কঠোর হবে।’

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তারা দেশের সব নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে:

১. চলন্ত বাসে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত তিন অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি।

২. দ্রুতবিচারের স্বার্থে মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো।

৩. ন্যাক্কারজনক এসব কাজে যেসব অপরাধী জড়িত, তাদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য আইনি সহায়তা না দিতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান।

৪. শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবে না, তা যেন বাস্তবে রূপ পায় সেজন্য সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি।

৫. পরিবহনের ড্রাইভার, হেলপার ও কন্ট্রাক্টর নিয়োগের সময় অবশ্যই বাস মালিক সমিতিকে তাদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট পরিচয়পত্র ও লিখিত অঙ্গীকারনামা নেয়া।

৬. বাস মালিক সমিতি তাদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট পরিচয়পত্র ও লিখিত অঙ্গীকারনামা সংগ্রহ না করলে সেক্ষেত্রে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সম্পূর্ণ দায়ভার বাস মালিক সমিতিকে নিতে হবে।

 

৭. মাদকাসক্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যেন পরিবহন এবং পরিবহন সমিতির সঙ্গে যুক্ত না থাকতে পারে সেদিকে সজাগ থাকতে পরিবহন মালিক ও প্রশাসনের দৃষ্টি রাখার দাবি।

৮. তিন অপরাধীকে আদালত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি  নিশ্চিত না করলে আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।

৯. এই মামলাটির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

উত্তরা ইউনিভার্সিটির ছাত্র মোহাম্মদ আকরাম হোসেন  বলেন, ‘আগামী সোমবার ওই তিন অপরাধীকে আদালতে তোলা হবে। তাদের জামিন দিলে বা বিচারটি বিলম্ব করার চেষ্টা করলে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।’

গত ২১ এপ্রিল শনিবার রাজধানীর বাড্ডায় তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে করে যাচ্ছিলেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী। বাসটি নতুনবাজার যাওয়ার পর চালক রোমান (২৭), কন্ট্রাক্টর মনির (২৭) ও হেলপার নয়ন (২৯) ভিকটিমকে অশ্লীল কথাবার্তাসহ ভিকটিমের হাত চেপে ধরেন। পাশাপাশি শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করেন।  এক পর্যায়ে ঝুঁকি নিয়ে বসুন্ধরা এলাকায় চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে নামেন সেই শিক্ষার্থী।

পরে ভিকটিম ওই ঘটনা তার সহপাঠীদের জানালে রবিবার সকাল থেকে গভীর রাত অবধি তারা উত্তরা এলাকায় অর্ধশত তুরাগ বাস আটক করে চাবি নিয়ে নেন। এ ঘটনার জেরে সোমবার তুরাগ পরিবহনের সব বাস চলাচল বন্ধ থাকে।

এ ঘটনায় রবিবার বিকালে গুলশান থানায় একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর স্বামী। পরে বিকালে সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তিনজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের গুলশান থানায় নেয়া হলে ভিকটিম গিয়ে তাদের শনাক্ত করেন।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :এপ্রিল ২৮, ২০১৮ ৮:২২ অপরাহ্ণ