নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী ১৫ মে হতে যাওয়া গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হলেও চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। তবে আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দুই সিটির নির্বাচনে দলের প্রার্থী ঘোষণা করার কথা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির মনোনয়ন বোর্ডের সূত্র গনমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
গতকাল রোববার বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে দুই সিটি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এমনকি কোনো প্রার্থীকে ভোটের প্রস্তুতি নিতেও বলা হয়নি। তবে আগামী ১৫ মে সিটি নির্বাচনে গাজীপুরে বর্তমান মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং খুলনার বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনি চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু আবদুল মান্নান অসুস্থ থাকায় গাজীপুরে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া খুলনায় নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিবে দল। যদিও তিনি নির্বাচনে আগ্রহী নন বলে জানান।
এদিকে খুলনা সিটি নির্বাচনে বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনিকে স্থানীয় বিএনপির একটি গ্রুপ মেনে না নেয়ার এ জটিলতা দেখা দেয়। এদিকে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মেয়র পদ প্রত্যাশী আবদুস সালাম গনমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি নিজেও মেয়র পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সবাই সেটি বাস্তবায়ন করব।’
গাজীপুর সিটিতে কে বেশি জনপ্রিয় জনগণের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধ্যাপক মান্নান সবার কাছে সমাদৃত। তিনি মাটি ও মানুষের নেতা। গাজীপুরের প্রতিটি মানুষ তাকে অনেক পছন্দ করেন। তবে হাসান উদ্দিন সরকারও দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। নিজের বিষয়ে আবদুস সালাম বলেন, আমি সাবেক ছাত্র নেতা, বর্তমানে মহানগর বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। দল চাইলে নির্বাচন করবো, যদি নির্দেশ দেয় অন্য কারো পক্ষে কাজ করতে সেটিও করবো। দলের সিদ্ধান্তই আমাদের সিদ্ধান্ত।
গতকাল রোববার দলীয় প্রতীক প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ হয়েছে। তবে এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত করিনি। পরে সংবাদ সম্মেলন করে আপনাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমাদের দলীয় মনোনয়ন বোর্ড ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় নি। এখনও তো সময় আছে দল সিদ্ধান্ত নিয়ে চুড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে।
গতকাল রোববার বিকেল ৫টা ২৫ মিনিট থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে খুলনা মহানগরের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত। ৪০ মিনিট বিরতি দিয়ে পরে সন্ধ্যা ৭ টা ১০ মিনিট থেকে রাত সাড়ে ৮ টায় পর্যন্ত চলে গাজীপুর সিটির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার।
সাক্ষাৎকার শেষে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু গনমাধ্যমকে বলেন, আমি এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন তুলতে চাইনি। কিন্তু সমর্থকরা তুলেছেন। কারণ আমি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে আগ্রহী। তাই মেয়র পদে নির্বাচন করতে চাই না। একারণে আমি মনোনয়ন বোর্ডে বর্তমান মেয়র মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিকে সমর্থন দিয়ে এসেছি। তিনি বলেন, আমি আমার ইচ্ছার কথা দলকে জানিয়েছি, এবং তাঁর পক্ষে যুক্তিও দিয়েছি। মনোনয়ন বোর্ড আমার যুক্তিতে সন্তুষ্ট। তারপরও দল যা ভালো মনে করবে সেটিই করবে।
জানতে চাইলে খুলনার বর্তমান মেয়র মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি গনমাধ্যমকে বলেন, আমাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে কাউকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়নি। সাক্ষাৎকার শেষে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। তারপরও আমাদের মনোনয়ন বোর্ড যাকেই মনোনয়ন দেবেন আমরা অতীতের মতো তাঁকে নিয়েই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরা আবার এই সিটিতে বিজয়ী হবো।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি