১০ই এপ্রিল, ২০২৫ ইং | ২৭শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৫৭
ব্রেকিং নিউজ

কুষ্টিয়ায় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার এলজিইডি’র প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি, সরকারী বাসায় বিনা ভাড়ায় থাকাসহ বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা লুটপাটের বিস্তর অভিযোগ ওঠেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর যোগদানের পর থেকেই উপজেলার আবাসিক এলাকার সরকারী সোনালী ভবনের দোতলায় একটি ফ্লাটে বসবাস করছেন। সেখানে তার মূল বেতনের হাউস রেন্ট হতে ৪৫% টাকা কর্তনের নিয়ম থাকলেও কোন টাকা না দিয়ে অবলীলায় ওই ফ্লাটে বসবাস করছেন।
সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর অফিসের জন্য আনুষঙ্গিক খাতে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ আসে যার সব টাকাগুলো ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে নেন প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ। একই সাথে অডিট টিমকে গিভ এন্ড টেক সিষ্টেমের মাধ্যমে পার পেয়ে যান। অন্যদিকে ২০১৫-২০১৬ এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এডিবি’র আনুষঙ্গিক ২ লাখ ৭০’হাজার টাকা উত্তোলন করে নিজ পকেটস্ত করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের মিরপুর উপজেলায় কর্মকালীন সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা তৈরি হয়। ওইসব রাস্তায় দেশীয় বিটুমিন ব্যবহার না করে কমদামী বিটুমিন ব্যবহার করতে ঠিকাদারদের বাধ্য করাতো এই শর্তে প্রতিটি ব্যারালে তাকে ১’হাজার করে টাকা দিতে হবে। এছাড়াও সে শতকরা ২টাকা ঘুষ (পিসি) আদায় করে ঠিকাদারদের কাছ থেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভুক্তভোগী ঠিকাদার জানিয়েছেন, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে জুন ফাইনালে ৬০ লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে খুলনায় চলে যান। সেখানে (খুলনায়) অভিজাত আবাসিক এলাকা খুলনার নিরালায় আলীশান বহুতল ২টি বাড়ী তৈরি করেছেন।
চলতি মাসের ২০ আগস্ট হতে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাইকা প্রজেক্টের অর্থায়নে এলজিইডি’র বাস্তবায়নে স্থানীয় নির্মাণ শ্রমিকদের ৫দিনব্যাপী একটা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২৫ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। প্রতিজন শ্রমিকের খাওয়া বাবদ ৩৪০ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। এ থেকেও প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ ২’শ টাকা করে কর্তন করে অংশগ্রহণকারীদের নি¤œমানের খাবার পরিবেশন করেন।
বিষয়টি মিরপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার নাসরিনের কর্ণগোচর হলে তিনি ওই বিলে সহি না করে ফাইলটি ফেরত পাঠান। তার (প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ) এসব দুর্নীতির ব্যাপারে মুঠোফোনে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহরাব আলীর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ২টি রাস্তায় কমদামি বিটুমিন দিয়ে কাজ করার অভিযোগ আসার সাথে সাথেই ওই বিটুমিন দিয়ে কাজ করা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর উপজেলার কোয়ার্টারে কিভাবে থাকে সেটি স্থানীয় প্রশাসনের বিষয়। তবে কেউ দুর্নীতি করলে তার দায়িত্ব ডিপার্টমেন্ট নেবেনা।
এ ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ কিছুদিন ওই কোয়ার্টারে ছিলেন এরপরই তিনি উপজেলা ডরমেটরীতে ভাড়া দিয়ে আছেন বলে আমি জানি।
তবে অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের সাথে সেল ফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, কোয়ার্টারে ছিলাম দুএক দিনের মধ্যেই ডরমেটরীতে চলে যাবো। কিন্তু টাকা আত্মসাৎ ও ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

 

প্রকাশ :আগস্ট ৩০, ২০১৭ ৪:১৪ অপরাহ্ণ