২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:১৫

টাঙ্গাইলে পানিবন্দি ৪ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

টাঙ্গাইলে যমুনায় পানি অনেকটা কমলেও জেলার অভ্যন্তরে বন্যা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ৬টি উপজেলা ও ২টি পৌরসভার সোয়া ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, ঔষধ ও গো খাদ্য সংকট। খেটে খাওয়া পরিবারের মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে অনেক পরিবারের মানুষ। বানভাসীদের মাঝে পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগন্য, এমনটাই জানিয়েছেন বন্যা কবলিত বেশ কিছু মানুষ ।

টাঙ্গাইল জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রাথমিক তথ্য সূত্রে জানাযায়, এবারের বন্যায় জেলার ভ‚ঞাপুর, গোপালপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর ও মির্জাপুর উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের ৬১৮টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। এছাড়া এলেঙ্গা ও মির্জাপুর পৌরসভা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত জেলার ৬টি উপজেলার ১ লাখ ১৪ হাজার ২৯০টি পরিবারের ৪ লাখ ২৭ হাজার ১৪০ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। জেলার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ অন্তত ১৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যা কবলিত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। জেলায় ঘড়বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪ হাজার ৬০৪ টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৬৫ হাজার ৫৮৪টি। বন্যায় জেলার ১০হাজার ৯১৬ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রায় ৬ হাজার পোল্ট্রি ফার্ম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র ভ‚ঞাপুর উপজেলাতেই ১০ লাখ লেয়ার মুরগি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।

ভ‚ঞাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম জানান, উপজেলার প্রায় সবগুলো গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। জমির ফসল ও পোল্ট্রি ফার্মের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বনভাসী মানুষ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি এবং উচু জায়গায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা অপ্রতুল। আরো ত্রাণ সামগ্রী দরকার। তিনি বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামর্থবানদের ভূঞাপুরে ত্রাণ সামগ্রী দেয়ার আহŸান জানিয়েছেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ‚ঞাপুর উপজেলায় ১১টি ও নাগরপুরে একটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে তিন হাজার ২৬৫টি পরিবারের ১২ হাজার ৬১০ জন মানুষ গাদাগাদি করে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। বানভাসীদের মাঝে ডায়রিয়া আমাশয়, সর্দি-জ্বর, শরীরে ক্ষয় রোগ সহ নানা রকম রোগ দেখা দিয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাসুম রেজা (প্রধান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) বলেন, জেলার ৬টি উপজেলা ও দুটি পৌরসভার ৬২৮টি গ্রামের ৪ লাখ ২৭ হাজার ১৪০ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ১২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। নতুন কোন এলাকা প্লাবিত না হলেও প্লাবিত এলাকায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

দৈনিকদেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :আগস্ট ২০, ২০১৭ ৮:১৬ অপরাহ্ণ