নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইফতেখারুল ইসলামসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হান উল ইসলাম পুলিশের ওয়ারী জোনের ডিসিকে মামলা তদন্ত করে ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এর আগে ১২ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলমের আদালতে মামলার আবেদন করেন শাহনা আক্তার নামে এক সাংবাদিকের স্ত্রী। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে আদেশের জন্য ১৯ জুলাই দিন ধার্য করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন—যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (প্রশাসন) আনিসুর রহমান, ওসি (তদন্ত) তোফায়েল আহমেদ, এসআই জাকির হোসেন, ওমর ফারুক, কবির হোসেন উকিল, শাহীন পারভেজ, লক্ষ্মীকান্ত রায়, শহীদুল্লাহ, কে এম এনায়েত হোসেন, এএসআই আতোয়ার রহমান, কনস্টেবল সাইফুল, পুলিশের সোর্স খোকন ও সুমন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শাহনা আক্তারের স্বামী ফরমান উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশায় ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন। ফরমান উল্লাহ যাত্রাবাড়ী থানার কিছু পুলিশ সদস্যকে মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগসাজশে নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানি করতে দেখতে পান। এতে তিনি চলতি বছরের ৫ মে, ৮ জুন ও ১৬ জুন ডাকযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পুলিশের বিভিন্ন দফতরে পৃথক অভিযোগ করেন।
অভিযোগের খবর পেয়ে অভিযুক্তরা তাকে ফোন করে থানায় ডেকে নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলেন। অভিযোগ তুলে না নিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
গত ২১ জুন শাহনা আক্তার তার স্বামীর সঙ্গে ওয়ারী থানাধীন রাজধানী সুপার মার্কেটে যান। এ সময় অভিযুক্তদের একজন ফরমান উল্লাহকে সালাউদ্দিন স্পেশালাইজ হাসপাতালে ডেকে নেন। দীর্ঘ সময় ফরমান উল্লাহ ফিরে না আসায় শাহনা আক্তারও সেখানে যান। এ সময় তিনি দেখতে পান, আসামিরা ফরমান উল্লাহকে টেনে-হিঁছড়ে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে যাচ্ছেন।
শাহনা আক্তার পুলিশের ওয়ারী জোনের উপকমিশনার (ডিসি) ফরিদকে বিষয়টি জানান। ডিসি ফরিদ এসি ইফতেখারুল ইসলামকে ফোন করে ফরমান উল্লাহকে ছেড়ে দিতে বলেন এবং শাহনা আক্তারকে থানায় গিয়ে তার স্বামীকে নিয়ে আসতে বলেন।
শাহনা আক্তার থানায় গেলে এসি ইফতেখারুল ইসলাম ডিসি ফরিদকে গালিগালাজ করেন এবং নিজেকে নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমানের মেয়ের জামাই পরিচয় দিয়ে শাহনা আক্তারকে অকথ্য গালাগাল, থাপ্পড় মারেন ও ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। এ সময় শাহনা আক্তার স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে এসি ইফতেখারুল এ জন্য ছয় লাখ টাকা দাবি করেন। পরে শাহনা আক্তার তাদের দুই লাখ টাকা দেন।
এর আগে ফরমান উল্লাহকে মারধর করেন অভিযুক্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে শাহনা আক্তার সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তার স্বামীকে তিনটি মাদক মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

