২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:৩২

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি এই মুহূর্তে বিএনপির এক নম্বর এজেন্ডা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি এই মুহূর্তে বিএনপির এক নম্বর এজেন্ডা। এই দাবিতে বিএনপির সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হলেও, খালেদা জিয়ার মুক্তি ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সোচ্চার হওয়ায় উভয়ের সম্পর্কে সুবাতাস বইছে। এর ফলে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামতে চাওয়া বিএনপির তৃণমূলেও একধরনের সন্তোষজনক অবস্থান লক্ষ করা গেছে।

বেগম জিয়ার মুক্তি দাবিতে গত রোববার রাজধানীতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এই কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্য ছিল অনেক বেশি জোরালো। বিশেষ করে ঐক্যফ্রন্টের বন্ধন অটুট রাখার পাশাপাশি বেগম জিয়ার মুক্তি দাবি নিয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে তাদের দেয়া বক্তব্য নেতাকর্মীদের উদ্দীপ্ত করেছে।
ওই অনুষ্ঠানে ঐক্যফ্রন্টের গুরুত্বপূর্ণ তিন নেতার মধ্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, স্লোগান দিলে খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন না। তাকে মুক্ত করতে হলে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়তে হবে। এখন এক লাখ কর্মী জেলে আছে, ৫০ লাখ কর্মীর নামে মামলা আছে। দরকার হলে আরো ৫০ লাখ আমরা কারাগারে যেতে রাজি আছি, এমন প্রত্যয় থাকলে খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারবেন। আমি এখনই আপনাদের সাথে রাস্তায় নামতে রাজি আছি, আপনারা রাস্তায় নামবেন কি না বলেন।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, গণতন্ত্র, বেগম খালেদা জিয়া এবং ন্যায়বিচার এক হয়ে গেছে। আজকেই যদি নির্বাচন হয়, আমি তো বলতে পারি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে যদি শেখ হাসিনা একটা গণভোটে আসেন, তাহলে শেখ হাসিনা পাঁচ পার্সেন্ট ভোটও পাবেন না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অতি শিগগিরই মুক্তি পাবেন, তাকে জনতার আদালত মুক্তি দেবে। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে দিন বেগম জিয়া বেরুবেন, সে দিন ঢাকা মহানগরে মানুষের ঢল নামবে।

জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্ট থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি উঠছে না, বিএনপির বিভিন্ন স্তরে এমন আলোচনাকে আমলে নিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। যার ফলে ফ্রন্টের গত ২৯ মার্চের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনার বিষয় ঠিক করতে গিয়ে প্রথমে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। ওই বৈঠকে নেতারা এ-ও বলেন, ঐক্যফ্রন্টকে আগামী দিনে আরো সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে। আর সেটি করতে হবে ফ্রন্টের মূল দল বিএনপির দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তাকে ধারণ করেই। এ কারণে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিকেও তারা এখন থেকে আরো বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরবেন।

জানা গেছে, তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাওয়াকে ধারণ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি ইস্যুর পাশাপাশি পুনর্নির্বাচনের দাবিতে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট। রমজানের আগে বিভাগপর্যায়ে মতবিনিময় কিংবা গণশুনানির মতো একাধিক কর্মসূচি নেয়া হতে পারে। এ ছাড়া ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের অনিয়ম নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি যে গণশুনানি করেছে ঐক্যফ্রন্ট, তা শিগগিরই বই আকারে বের করা হবে। ওই শুনানিতে বিচারকের দায়িত্বে থাকা বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও মূল্যায়ন ছাপা হবে বইয়ে। ভোট ডাকাতির সচিত্র বর্ণনাসংবলিত ওই বই বিভিন্ন দূতাবাসে দেয়া হবে। একই সাথে পাঠানো হবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছেও।

প্রকাশ :এপ্রিল ১০, ২০১৯ ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ