২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৫৬

৪ বছর মর্গে থাকার পর নিপার লাশ হস্তান্তর

রংপুর প্রতিবেদক:

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের মর্গে আইনি জটিলতায় ৪ বছর পড়ে থাকা হোসনে আরা লাইজু ওরফে নিপা রানীর লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রমেক হাসপাতালের পরিচালক অজয় রায় আনুষ্ঠানিকভাবে নিপার লাশ হস্তান্তর করেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমার নিকট। এ সময় লাইজুর শ্বশুর বাড়ির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত ১২ এপ্রিল নিপার লাশ ইসলামী রীতি অনুযায়ী দাফনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ের কপি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে দাফন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রায়ের ২২ দিন পর লাশের একটি সুরাহা হলো।

সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার বামনিয়া ইউনিয়নের অক্ষয় কুমার রায়ের মেয়ে নিপা রানী রায়। নিপা রানীর সাথে পার্শ্ববর্তী বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের ওর্য়াড মেম্বার জহুরুল ইসলামের পুত্র হুমাযুন কবির রাজুর প্রেম ছিল। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে নীলফামারী নোটারি পাবলিক ক্লাবের মাধ্যমে এফিডেভিটে ২ লাখ ১ হাজার ৫০১ টাকা দেনমোহরে হুমায়ুন কবির বিয়ে করেন নিপাকে। এ সময় নিপার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় হোসনে আরা লাইজু।

২০১৩ সালের অক্টোবরে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার লিপা রাণী এবং পাশের গ্রামের হুমায়ন ফরিদ লাইজু পালিয়ে বিয়ে করে। মেয়েটি সে সময় ধর্মান্তরিত হয়। কিন্তু মেয়ের বাবা ছেলেটি এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করে।

কিন্তু সেসময় স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ের কাগজপত্রসহ আদালতে হাজির করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন লিপা এবং লাইজু দুইজন। এরপর আদালত অপহরণ মামলাটি খারিজ করে দেয়।

এরপর মেয়ের বাবা মেয়েকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক দাবি করে আপিল করে। তখন আদালত আবেদন আমলে নিয়ে মেয়েটিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য রাজশাহী সেফ হোমে পাঠিয়ে দেয়।

এ পর্যায়ে ২০১৪ সালের ১৫ই জানুয়ারি লাইজু বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। তিন মাস পরে ২০১৪ সালের ১০ই মার্চ আত্মহত্যা করে মেয়েটিও।

লাইজুর বাবা ও মেয়েটির শ্বশুর জহুরুল ইসলাম বলেছেন, এরপরই তিনি আদালতে আর্জি জানান, মেয়েটি লাশের সৎকার ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী করার অধিকার চান তিনি।

যেহেতু মেয়েটি তার পুত্রবধূ, এবং সে বিয়ের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। কিন্তু মেয়ের বাবা হিন্দু শাস্ত্র মতে সৎকারের জন্য আদালতে আবেদন করেন।

এই বিরোধে চার বছরের বেশি সময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিলেন লিপা। জহুরুল ইসলাম বলেছেন, ছেলের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দীর্ঘ আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন।

দৈনিক দেশজনতা/ এন আর

প্রকাশ :মে ৪, ২০১৮ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ