নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরে ফেরা মানুষের চাপ থাকে কয়েকগুণ বেশি। তাই রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ফেরা যাত্রীদের চাপ সামলাতে ও নিরাপত্তায় এবার অতিরিক্ত কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে।
এবারও সব ধরনের অনাকাঙ্কিত পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) একযোগে কাজ করবে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এবারের ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে ১৪টি লঞ্চ বাড়ানো ও ৪১ রুটে মোট ১১৭টি লঞ্চ যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে মোট জাহাজ রয়েছে ১৯৮টি। বরিশাল রুটে সবচেয়ে বেশি ১৫টি লঞ্চ যাবে।
প্রতিটি লঞ্চে পর্যাপ্ত মাস্টার ও ড্রাইভার রয়েছে কিনা তা ইতোমধ্যেই পরীক্ষা করেছে বিআইডব্লিউটিএ এবং প্রতিটি লঞ্চে যাত্রী সংখ্যা অনুপাতে বয়া ও লাইফ জ্যাকেটের সংখ্যা বাড়ানো, সার্ভে সনদ ছাড়া কোনো নৌযান ঘাটে ভিড়তে পারবে না, কোনো লঞ্চ মাঝ নদীতে রাখা যাবে না ও নৌকা দিয়ে লঞ্চে যাত্রী ওঠানো যাবে না বলে নির্দেশনাও দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
এছাড়া যেকোনো লঞ্চে যাত্রীবোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাট থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে হবে। নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো লঞ্চ ঘাটে আসতে পারবে না, এলে তার রুট পারমিট বাতিল ও জরিমানা করা হবে, সদরঘাটে মালিক পক্ষ সবসময় মাইকিং করবে, ঈদের সময় নৌযানে কোনো মালামাল বহন করা যাবে না।
বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও তথ্যাদি জানিয়ে মাইকিং ব্যবস্থা থাকবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বাদামতলী পর্যন্ত। ভির বাড়লে এই রাস্তাকে একমুখি রাস্তায় রুপান্তর করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ঈদে সদরঘাটে থাকছে ডিএমপির ২৫০ জন পুলিশ, ৪০ জন নৌ-পুলিশ,র্যাবের ১৫ জনের একটি টিম (নিয়মিত), কোস্টগার্ড ১৫ জন, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ১৪ জন, বিএনসিসি ক্যাডেট ৭০ জন ও নৌ-নিরাপত্তার ক্যাডেট থাকবে ২৫ জন। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিরাপত্তারক্ষী আরো বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
এছাড়া এবার যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সদরঘাটের ১৪টি প্রবেশপথে মোট ২৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য চার হাজার ২০০ বর্গফুট পার্কিং স্পেস করা হয়েছে।
সদরঘাটের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, এবারের ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকটি স্তরে নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), কোস্টগার্ড, র্যাব, আনসার বাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ডুবুরি দল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এবং নৌ-নিরাপত্তার ক্যাডেট দল কাজ করবে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে সে দিকে বিশেষ নজর রাখছি আমরা। কোনো লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মালিকপক্ষ থেকে ঈদ উপলক্ষে নেওয়া নিরাপত্তা সম্পর্কে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার প্রধান উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, মালিকদের কাছে প্রতিটি যাত্রী লক্ষ্মীর মতো। কোনো মালিক চায় না যাত্রীর ক্ষতি হোক। আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। আশা করি কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই যাত্রীরা বাড়ি যেতে পারবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ