২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:২৪

বাঘাইছড়িতে ২ হাজার ৭শ’৩০ পরিবার পানি বন্দী

শাহ আলম,রাঙামাটি প্রতিনিধি
গত কয়েক দিনের পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বর্ষনে বাঘাইছড়ি উপজেলা নিম্ম অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঘাইছড়ি পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় উপজেলা সদরসহ নিম্ম অঞ্চলের কয়েক হাজার একর কৃষি ফসলাদির ব্যাপকক্ষতি সাধিত হয়েছে। বেশী ক্ষতি হয়েছে এ মৌসমের তরিতরকারি ও বর্ষ মৌসমের ধানের ফসল।

উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ প্রচেষ্টায় পানি বন্দী লোকজনকে জরুরী ভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে গুলোতে সরিয়ে হচ্ছে। গত তিন দিনে বন্যার পানি বিপদসীমার নিচে ছিল। গতকাল রোববার থেকে আবার পানি বাড়তে শুরু করছে। গতকালের পানি বাড়াতে আরো বেশ কিছু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহন করেছেন। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সর্ব মোট ২হাজার ৭শ’৩০ পরিবার পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ১২শ’ পরিবার পৌরসভার মধ্যে পড়েছে।

সূত্রে জানা গেছে,পানি বেড়ে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ,বাঘাইহাট, বালুখালী, রুপকারি,করেঙ্গাতলী, তুলাবন,বারবিন্দু ঘাট, বাঘাইছড়ি গ্রাম, উগলছড়ি, বটতলী, লাইল্যাঘোনা, মারিশ্যা, আমতলী, সার্রোয়াতলী, রুপকারী,বঙ্গলতলী ও খেদারমারা। স্থানীয়রা জানান,গত তিন দিনের টানা ভারী বর্ষনে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি না হলে আজ থেকে যে ভাবে পানি বাড়তে শুরু করছে তাতে আরো বিপদের আশংকা রয়েছে। অপর এক সূত্রে জানা গেছে, এত বড় বন্যায় আশ্রয়িতদের কোন খোজ খবর নিচ্ছেন না উপজেলা আ’লীগ এতে করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের রষানলে পড়ের উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন।

এদিকে পৌরসভার মেয়র মো.জাফর আলী খাঁন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তাজুল ইসলাম বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের লোকজনের সাথে কথাবার্তা বলেছেন। তারা জানান মোট ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হলো সরকারী-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রত্যেকটি
আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি একটু ভাল হলেই আশ্রয়িতদের মধ্যে চাউল ডাল বিতরণ করা হবে।

এদিকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক বন্যার্তদের জন্য নগদ ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। অন্যদিকে পৌরসভা কাউন্সিলরা তাদের উদ্যোগে বেশ কিছু আশ্রয় কেন্দ্রে দুপুরের ভুনা খিচড়ি বিতারণ করেন। উপজেলা প্রশাসন চিড়া মুড়ি বিস্কুট ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। পানিবন্দী
মানুষগুলো বিপাকে পড়েছে গরু ছাগল,হাঁস মুরগি নিয়ে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ কর্মরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা তোফায়েল আহম্মদ
জানান, বন্যায় ২শ’ হেক্টর সবজির জমি এবং ২ হাজার ৫শ’ হেক্টর আমন ধানের জমি প্লাবিত হয়েছে।
এবছর যে সব চাষী আমন ধানের চাষ করেছে তারা কেউ আর ফসলের মূখ দেখবেন না। এবন্যায় বাঘাইছড়ি কৃষকদের মাথায় হাত বসিয়েছে।

রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ড.প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, গতকাল থেকে বন্যার পানি আরো বেড়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে
। সেখানে উপজেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ পর্যাবেক্ষক কমিটি মনিটরিং করছে। গতকাল বিকাল থেকে রিতিমত আশ্রয়িতদের মধ্যে ডাল,চাউল,চিড়া, মুড়ি ও বিস্কুট বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে
প্রতি ঘন্টায় বন্যার আপডেট সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোন প্রকার সমস্যা নেই বাঘাইছড়ি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে।

দৈনিক দেশজনতা/এন আর

প্রকাশ :আগস্ট ১৪, ২০১৭ ৯:৩২ অপরাহ্ণ